ঢাকা ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পেন্টাগনে ৫,৪০০ কর্মী ছাঁটাই, নতুন নিয়োগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত দেশ গঠনে সবার ঐক্য দরকার: মির্জা ফখরুল ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনা: অবৈধ অভিবাসীদের সামরিক ঘাঁটিতে আটকের উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন খনিজ চুক্তি: স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে কমলগঞ্জে হলুদ ফুলকপির চাষে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি, চাষিরা উপভোগ করছেন লাভের সাফল্য নয়াদিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন: বিজিবির দাবি, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা হোক স্পেসএক্স উৎক্ষেপণ করল ২৩টি স্টারলিংক স্যাটেলাইট, দ্রুত ইন্টারনেটের নতুন দিগন্ত রমজান মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহের স্বাভাবিকতা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি: জ্বালানি উপদেষ্টা বৈষম্যবিরোধীদের নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ আজ: স্লোগান হবে ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’ ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা, স্থানীয়দের হাতে আটক যুবক

রাজশাহী গামী বাসে ডাকাতি: যাত্রীদের অভিজ্ঞতা

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

 

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির পাশাপাশি দুই নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের জামিন দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি আদালত সূত্রে নিশ্চিত করা হয়।

নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলামের পরিচালনায় ঢাকা-রাজশাহী রুটের ইউনিক রোড রয়েলস বাসের চালক বাবলু ইসলাম (৩৫), সহকারী সুমন ইসলাম (৩৫) এবং সুপারভাইজার মাহবুল আলমকে (৩৮) বুধবার বিকালে আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাদের আদালতে হাজির করা হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান সুমন শুনানি শেষে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন।

আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, মামলাটি ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারার আওতায় হওয়ায় এবং আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় আদালত জামিনের আদেশ দেন।

এদিকে ডাকাতির শিকার বাসের যাত্রী ওমর আলী বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেদিন রাত সাড়ে ১১টায় বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। কিছু দূর যেতেই তিনজন যাত্রী ওঠে এবং হেলপারের সঙ্গে কানে কানে কথা বলে। পরে বাইপাইল এলাকায় আরও পাঁচজন ওঠে এবং তারা চালককে বলেন, “আপনি অনেকক্ষণ গাড়ি চালাচ্ছেন, এবার আসুন আমরা চালাব।” এরপর একজন চালক হিসেবে গাড়ি চালাতে শুরু করে। ১০ মিনিট পরেই তারা চাকু-ছুরি বের করে মারধর শুরু করে এবং ডাকাতি চালায়।

বাসের যাত্রীদের থেকে ৮-৯ বার চেক করে সবকিছু নিয়ে যায়। মেয়েদের কানের দুল ছিঁড়ে নেয় এবং প্যান্ট ছিঁড়ে দেয়। ডাকাতির পুরো ঘটনাটি আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়। পরে তারা একটি নির্জন স্থানে নেমে পড়ে।

ওমর আলী জানান, আগের চালক তাদের বলেন, “গাড়িতে তেল নেই, এখানে নেমে যান।” কিন্তু যাত্রীরা নামেনি। সোহাগের কৌশলে লুকানো মোবাইল দিয়ে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ আসে। হাইওয়ে পুলিশ জানায়, মির্জাপুর থানায় যেতে হবে। সেখানে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখে অভিযোগ জানাতে বলেন।

বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করার চেষ্টা করা হলেও সফল হয়নি। তিনি বলেন, “শুনেছি চালক ও হেলপার জামিন পেয়েছে। মির্জাপুর থানায় গিয়ে মামলা করবো, কারণ আমাদের অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।”

রাজশাহীর চারঘাট এলাকার আরেক নারী যাত্রী জানান, বাসে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি, তবে ডাকাতি হয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, যাত্রীরা মৌখিকভাবে ডাকাতির কথা বলেছেন। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি, আর ঘটনার স্থান অন্য জেলায় হওয়ায় আটককৃতদের কার্যবিধি ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:১৩:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৫১২ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী গামী বাসে ডাকাতি: যাত্রীদের অভিজ্ঞতা

আপডেট সময় ০৩:১৩:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির পাশাপাশি দুই নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের জামিন দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি আদালত সূত্রে নিশ্চিত করা হয়।

নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলামের পরিচালনায় ঢাকা-রাজশাহী রুটের ইউনিক রোড রয়েলস বাসের চালক বাবলু ইসলাম (৩৫), সহকারী সুমন ইসলাম (৩৫) এবং সুপারভাইজার মাহবুল আলমকে (৩৮) বুধবার বিকালে আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাদের আদালতে হাজির করা হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান সুমন শুনানি শেষে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন।

আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, মামলাটি ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারার আওতায় হওয়ায় এবং আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় আদালত জামিনের আদেশ দেন।

এদিকে ডাকাতির শিকার বাসের যাত্রী ওমর আলী বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেদিন রাত সাড়ে ১১টায় বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। কিছু দূর যেতেই তিনজন যাত্রী ওঠে এবং হেলপারের সঙ্গে কানে কানে কথা বলে। পরে বাইপাইল এলাকায় আরও পাঁচজন ওঠে এবং তারা চালককে বলেন, “আপনি অনেকক্ষণ গাড়ি চালাচ্ছেন, এবার আসুন আমরা চালাব।” এরপর একজন চালক হিসেবে গাড়ি চালাতে শুরু করে। ১০ মিনিট পরেই তারা চাকু-ছুরি বের করে মারধর শুরু করে এবং ডাকাতি চালায়।

বাসের যাত্রীদের থেকে ৮-৯ বার চেক করে সবকিছু নিয়ে যায়। মেয়েদের কানের দুল ছিঁড়ে নেয় এবং প্যান্ট ছিঁড়ে দেয়। ডাকাতির পুরো ঘটনাটি আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়। পরে তারা একটি নির্জন স্থানে নেমে পড়ে।

ওমর আলী জানান, আগের চালক তাদের বলেন, “গাড়িতে তেল নেই, এখানে নেমে যান।” কিন্তু যাত্রীরা নামেনি। সোহাগের কৌশলে লুকানো মোবাইল দিয়ে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ আসে। হাইওয়ে পুলিশ জানায়, মির্জাপুর থানায় যেতে হবে। সেখানে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখে অভিযোগ জানাতে বলেন।

বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করার চেষ্টা করা হলেও সফল হয়নি। তিনি বলেন, “শুনেছি চালক ও হেলপার জামিন পেয়েছে। মির্জাপুর থানায় গিয়ে মামলা করবো, কারণ আমাদের অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।”

রাজশাহীর চারঘাট এলাকার আরেক নারী যাত্রী জানান, বাসে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি, তবে ডাকাতি হয়েছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, যাত্রীরা মৌখিকভাবে ডাকাতির কথা বলেছেন। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি, আর ঘটনার স্থান অন্য জেলায় হওয়ায় আটককৃতদের কার্যবিধি ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।