রাজশাহী গামী বাসে ডাকাতি: যাত্রীদের অভিজ্ঞতা
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির পাশাপাশি দুই নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের জামিন দেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি আদালত সূত্রে নিশ্চিত করা হয়।
নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলামের পরিচালনায় ঢাকা-রাজশাহী রুটের ইউনিক রোড রয়েলস বাসের চালক বাবলু ইসলাম (৩৫), সহকারী সুমন ইসলাম (৩৫) এবং সুপারভাইজার মাহবুল আলমকে (৩৮) বুধবার বিকালে আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাদের আদালতে হাজির করা হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান সুমন শুনানি শেষে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন।
আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, মামলাটি ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারার আওতায় হওয়ায় এবং আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় আদালত জামিনের আদেশ দেন।
এদিকে ডাকাতির শিকার বাসের যাত্রী ওমর আলী বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেদিন রাত সাড়ে ১১টায় বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। কিছু দূর যেতেই তিনজন যাত্রী ওঠে এবং হেলপারের সঙ্গে কানে কানে কথা বলে। পরে বাইপাইল এলাকায় আরও পাঁচজন ওঠে এবং তারা চালককে বলেন, “আপনি অনেকক্ষণ গাড়ি চালাচ্ছেন, এবার আসুন আমরা চালাব।” এরপর একজন চালক হিসেবে গাড়ি চালাতে শুরু করে। ১০ মিনিট পরেই তারা চাকু-ছুরি বের করে মারধর শুরু করে এবং ডাকাতি চালায়।
বাসের যাত্রীদের থেকে ৮-৯ বার চেক করে সবকিছু নিয়ে যায়। মেয়েদের কানের দুল ছিঁড়ে নেয় এবং প্যান্ট ছিঁড়ে দেয়। ডাকাতির পুরো ঘটনাটি আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়। পরে তারা একটি নির্জন স্থানে নেমে পড়ে।
ওমর আলী জানান, আগের চালক তাদের বলেন, “গাড়িতে তেল নেই, এখানে নেমে যান।” কিন্তু যাত্রীরা নামেনি। সোহাগের কৌশলে লুকানো মোবাইল দিয়ে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ আসে। হাইওয়ে পুলিশ জানায়, মির্জাপুর থানায় যেতে হবে। সেখানে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখে অভিযোগ জানাতে বলেন।
বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করার চেষ্টা করা হলেও সফল হয়নি। তিনি বলেন, “শুনেছি চালক ও হেলপার জামিন পেয়েছে। মির্জাপুর থানায় গিয়ে মামলা করবো, কারণ আমাদের অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
রাজশাহীর চারঘাট এলাকার আরেক নারী যাত্রী জানান, বাসে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি, তবে ডাকাতি হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, যাত্রীরা মৌখিকভাবে ডাকাতির কথা বলেছেন। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি, আর ঘটনার স্থান অন্য জেলায় হওয়ায় আটককৃতদের কার্যবিধি ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।