বিচার বিভাগ সংস্কার: অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই হবে প্রধান বিচারপতি নির্বাচন, বিচার বিভাগ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা বাড়াতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও প্রস্তাব দিয়েছে। কমিশন বলছে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা উচিত। তাদের মতে, আপিল বিভাগের প্রবীণতম বিচারককে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করার বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যাতে রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার ব্যবহার সীমিত হয় এবং রাজনৈতিক বিবেচনার সুযোগ কমে যায়।
বর্তমানে প্রধান বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের শিকার হওয়ার কারণে জ্যেষ্ঠতা ও মেধার পরিবর্তে পক্ষপাতিত্বের ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। কমিশন বলছে, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলম্বিত প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসলে প্রধান বিচারপতির নিয়োগে স্বচ্ছতা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
এছাড়া, হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগের জন্য ৪৮ বছরের বয়স নির্ধারণ এবং বিচারকদের অবসরকালীন বয়স ৭০ বছর করার প্রস্তাবও দিয়েছে কমিশন। বর্তমান সংবিধানে বিচারপতি নিয়োগে বয়স সংক্রান্ত কোনো শর্ত নেই, যা নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে। কমিশন আরও জানিয়েছে, অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা বা জেলা জজ হিসেবে ৩ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতার প্রয়োজনীয়তা থাকবে।
এছাড়া, আদালত অবমাননা সংক্রান্ত বিষয়ও পরিষ্কার করার জন্য কমিশন সুপ্রিম কোর্টের ১০৮ অনুচ্ছেদে সংশোধন প্রস্তাব করেছে। এতে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য বা বাস্তবায়নে বাধা দিলে তা আদালত অবমাননা হিসেবে গণ্য হবে।
এ ধরনের সংস্কার বিচার বিভাগের কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত করবে, যা দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা স্থাপনে সহায়ক হবে।