কিশোরগঞ্জের কৃষকদের দুর্দশা: মিষ্টি কুমড়ার উৎপাদন বেড়েছে, দাম স্থবির
কিশোরগঞ্জে মিষ্টি কুমড়া চাষে কৃষকরা ভয়াবহ সংকটে পড়েছেন। একদিকে ফলন কম, অন্যদিকে চাষাবাদে খরচের সঙ্গে বিক্রির দাম মিলছে না। স্থানীয় বাজারে মিষ্টি কুমড়ার প্রতি কেজি দাম বর্তমানে ৬ থেকে ১০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম। ব্যবসায়ীরা জানান, অতিরিক্ত আমদানির কারণে বাজারে মূল্য কমে গেছে।
গত বছর কিশোরগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছিল, কিন্তু এ বছর তা বেড়ে ১ হাজার ২১৬ হেক্টর হয়েছে। তাড়াইল ও ইটনা উপজেলায় বেশি জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ হলেও ফলন আশানুরূপ হয়নি। বিস্তীর্ণ হাওরে সাধারণত এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৬০% কুমড়া বিক্রি হয়ে যায়, কিন্তু এবারে তা হয়নি।
কৃষকদের মতে, মিষ্টি কুমড়া এখন তাদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় যেখানে প্রতি কেজি কুমড়া ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হতো, সেখানে বর্তমানে তা ৬ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কম হলেও সার, কীটনাশক এবং শ্রমিকের খরচ বেড়ে গেছে, ফলে চাষাবাদের খরচও অনেক বেড়ে গেছে।
রায়টুটি ইউনিয়নের কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, তিনি ১ হাজার ২০০ কাঠা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ৫৬ লাখ টাকা, কিন্তু বর্তমানে যে দাম চলছে, তা দিয়ে খরচ উঠানো কঠিন।
অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মিষ্টি কুমড়া বাজারে বিক্রি হলেও লাভ কমে গেছে। এ বছর দাম কম থাকায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাইকাররা জানান, তারা ১০ টাকা কেজি দরে কিনলেও, বাজারে বিক্রি করার সময় ১৪ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইমরুল কায়েস বলেন, “এ বছর উৎপাদন বেড়েছে, কিন্তু বাজারে দাম কমেছে। অন্যান্য সবজি উৎপাদনও বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে।”
এভাবে কৃষকদের বিপদ বাড়লেও শহরের বাজারে মিষ্টি কুমড়ার প্রতি কেজি দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।