কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে আবারও জেলে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জলসীমার কাছাকাছি এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ অন্তত ১১ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে সশস্ত্র মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে এই অপহরণের ঘটনা ঘটে বলে জানান টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম। তিনি জানান, “বাংলাদেশ জলসীমার ভেতরেই হঠাৎ আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা ট্রলারে হামলা চালিয়ে আমাদের জেলেদের ধরে নিয়ে যায়। আমার নিজের ট্রলারটিও রয়েছে ওই দুটি ট্রলারের মধ্যে। এ ছাড়া আরও দুটি ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে বলে শুনেছি।”
অবৈধ অনুপ্রবেশ করে এভাবে জেলেদের তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় জেলে ও ট্রলার মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
শাহপরীর দ্বীপ ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, “ট্রলার ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে ঠিক কোন ঘাটের নৌকা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমাদের এলাকার কয়েকটি ট্রলারকে সাগরে ধাওয়া করেছে বলেও শুনেছি।”
জানতে চাইলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী নুরুল কায়েছ বলেন, “প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটছে। মাঝে মধ্যেই মিয়ানমারের দিক থেকে লোকজন এসে আমাদের জেলেদের ধরে নিয়ে যায়। আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এইভাবে চলতে থাকলে জেলেরা আর সাগরে নামবে না।”
ঘটনার বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, “বিষয়টি আমরা জেনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে অপহৃত জেলেদের ফেরত আনার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিকবার টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর এলাকায় জেলেদের অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবারই অভিযোগের তীর ছিল মিয়ানমারের আরাকান আর্মির দিকে।
স্থানীয়রা বলছেন, যদি এই সমস্যা সমাধান না হয়, তাহলে দেশের সীমানার কাছাকাছি সাগরে মাছ ধরার কাজ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। ফলে শুধু স্থানীয় অর্থনীতি নয়, জাতীয় মৎস্য সম্পদেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীর হস্তক্ষেপেই কেবল এই ধরনের দুঃসাহসিক অপহরণ বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।