ঢাকা ০১:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
হানিফ ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুর্নীতির মামলা, সম্পদ বিবরণী চেয়ে আইনি নোটিশ বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় দুই ট্রলারসহ ৩৪ জেলে আটক শুধু বাহক নয়, মাদকের গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পরমাণু সংস্থার পরিদর্শকদের জুতার ভেতরে গুপ্তচর চিপ! দাবি ইরানের। ইউক্রেনে সেনা খসড়ায় স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি: ১৭-২৫ বছরের তরুণদের জন্য পালানোর আর পথ নেই। রাশিয়ার “মেগা-অফেনসিভ” পরিকল্পনা, সঙ্গে থাকছে ৩০,০০০ উত্তর কোরিয়ান সেনা অপরাধ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশমন্ত্রী বরখাস্ত আমাদের উজানের দেশ, তথ্য না দিলে বন্যার প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন: পরিবেশ উপদেষ্টা সর্দি কাশি নিরাময়ে লবঙ্গের ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিয়ে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা

বন্দরে অচলাবস্থা: কলম বিরতিতে থেমে গেছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কার্যক্রম

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৩১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / 16

ছবি সংগৃহীত

 

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার এসে জমা হলেও খালাস হচ্ছে না একটিও। প্রতিদিন শত শত কনটেইনার পণ্যসহ নামছে, কিন্তু কাস্টমসের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো পণ্য ছাড়া যাচ্ছে না। ফলে জমে যাচ্ছে কনটেইনার, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা, বিশেষ করে পোশাক শিল্প।

এই অচলাবস্থার কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে নতুন দুটি বিভাগ ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ গঠনের সিদ্ধান্ত। ১৪ মে থেকে মাঠপর্যায়ের কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলম বিরতিতে যান।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “প্রতি ঘণ্টায় কনটেইনার নামছে, কিন্তু খালাস হচ্ছে না। জায়গা সঙ্কট শুরু হয়ে গেছে, কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন কনটেইনার নামানো বন্ধ করতে হতে পারে।”

বন্দরের ধারণক্ষমতা ৫৩,০০০ টিইইউস হলেও বর্তমানে জমে আছে ৪১,০০০ এর বেশি টিইইউস কনটেইনার। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১,০০০ টিইইউস কনটেইনার খালাস হয়, এখন তা পুরোপুরি বন্ধ।

শুধু শিল্প খাত নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরাও। ফাল্গুনী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল খান জানান, “আজকেও কোনো শুল্কায়ন হয়নি। দেরির কারণে চারগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে।”

বিশেষভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে পোশাক খাত। বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “আমাদের এখনই কাঁচামাল দরকার। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতাদেশের সুযোগে রপ্তানির আদেশ পেয়েছি, কিন্তু পণ্য না পেয়ে সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারছি না।”

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস দেশের ৯৫% আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন সম্পন্ন করে। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি কার্যত এখন নিথর।

২০ মে আলোচনার আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত হলেও ২১ মে থেকে আবারও কার্যক্রমে স্থবিরতা ফিরে আসে। কর্মকর্তারা মুখে বলছেন কার্যক্রম চলছে, কিন্তু বাস্তবে কাগজে-কলমে বন্ধই। কেউই প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইছেন না।

এই অচলাবস্থা শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, গোটা আমদানি-রপ্তানি অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, পণ্য আটকে থাকায় ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়েই চলেছে। চলমান পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াতে পারে কোটি কোটি ডলারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বন্দরে অচলাবস্থা: কলম বিরতিতে থেমে গেছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কার্যক্রম

আপডেট সময় ০৪:৩১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

 

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার এসে জমা হলেও খালাস হচ্ছে না একটিও। প্রতিদিন শত শত কনটেইনার পণ্যসহ নামছে, কিন্তু কাস্টমসের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো পণ্য ছাড়া যাচ্ছে না। ফলে জমে যাচ্ছে কনটেইনার, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা, বিশেষ করে পোশাক শিল্প।

এই অচলাবস্থার কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে নতুন দুটি বিভাগ ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ গঠনের সিদ্ধান্ত। ১৪ মে থেকে মাঠপর্যায়ের কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলম বিরতিতে যান।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “প্রতি ঘণ্টায় কনটেইনার নামছে, কিন্তু খালাস হচ্ছে না। জায়গা সঙ্কট শুরু হয়ে গেছে, কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন কনটেইনার নামানো বন্ধ করতে হতে পারে।”

বন্দরের ধারণক্ষমতা ৫৩,০০০ টিইইউস হলেও বর্তমানে জমে আছে ৪১,০০০ এর বেশি টিইইউস কনটেইনার। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১,০০০ টিইইউস কনটেইনার খালাস হয়, এখন তা পুরোপুরি বন্ধ।

শুধু শিল্প খাত নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরাও। ফাল্গুনী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল খান জানান, “আজকেও কোনো শুল্কায়ন হয়নি। দেরির কারণে চারগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে।”

বিশেষভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে পোশাক খাত। বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “আমাদের এখনই কাঁচামাল দরকার। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতাদেশের সুযোগে রপ্তানির আদেশ পেয়েছি, কিন্তু পণ্য না পেয়ে সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারছি না।”

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস দেশের ৯৫% আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন সম্পন্ন করে। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি কার্যত এখন নিথর।

২০ মে আলোচনার আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত হলেও ২১ মে থেকে আবারও কার্যক্রমে স্থবিরতা ফিরে আসে। কর্মকর্তারা মুখে বলছেন কার্যক্রম চলছে, কিন্তু বাস্তবে কাগজে-কলমে বন্ধই। কেউই প্রকাশ্যে কথা বলতে চাইছেন না।

এই অচলাবস্থা শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, গোটা আমদানি-রপ্তানি অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, পণ্য আটকে থাকায় ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়েই চলেছে। চলমান পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াতে পারে কোটি কোটি ডলারে।