ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে রাজনীতি স্থগিত, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ, নিষিদ্ধের দাবি

- আপডেট সময় ০৪:৫৩:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
- / 42
ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (এফইসি) ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বুধবার (৫ মার্চ) কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে, রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ না করে শুধু স্থগিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, মঙ্গলবার দিনভর ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে, বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বাড়ছে এবং শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। কলেজ প্রশাসনের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে পূর্বের ২০ আগস্টের নোটিশের আলোকে ক্যাম্পাসের ভেতর সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।”
কিন্তু প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী সুরাইয়া বলেন, “চার দিন আগে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, এরপর থেকেই বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। মোটরসাইকেল শোডাউন দিচ্ছে, মেয়েদের হলে গিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। আমরা চাই রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হোক, স্থগিত করে সমস্যার সমাধান হবে না।” একই মত প্রকাশ করেন আরেক শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ। তিনি বলেন, “আমরা নিষেধাজ্ঞা চেয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসন সেটাকে শুধু স্থগিত করেছে। এর মাধ্যমে যে কোনো সময় আবার ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা ফিরে আসতে পারে।”
এদিকে, সদ্য ঘোষিত ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাসেল বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা যখন রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, তখন আমরাও রাজনীতি করতে পারব না কেন? আমাদের ক্যাম্পাসের তিনজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলা শাখার কমিটিতে রয়েছেন, তারা রাজনীতি করলে আমরা কেন বঞ্চিত হব?” বহিরাগতদের নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে, তাদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের দোসর। ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের দোষারোপ করছে।”
প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পরও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ এটাকে ইতিবাচক মনে করলেও, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্থগিতকরণের পরিবর্তে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত ছিল। তাদের আশঙ্কা, স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে আবারও রাজনৈতিক অস্থিরতা ফিরে আসবে, যা শিক্ষার পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।