শের-ই-বাংলা মেডিকেল শাটডাউনের চতুর্থ দিন: সড়ক অবরোধে শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল শহরের ব্যস্ততম বান্দরোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা, যার ফলে সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, কলেজে ৬০ শতাংশের বেশি শিক্ষকের পদ শূন্য, যার ফলে একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, ফিজিওলজি, সিসিইউ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং ডেন্টাল ইউনিটে শিক্ষক সংকট তীব্র। এমন অবস্থায় মানসম্মত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, যা ভবিষ্যতে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সংকট নিরসনের পরিবর্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জুনিয়র ছয়জন চিকিৎসককে প্রভাষক ও কিউরেটর হিসেবে পদায়ন করেছে, যা সমস্যার প্রকৃত সমাধান নয়। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে তারা ওই প্রজ্ঞাপন পুড়িয়ে দেন এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
এর আগে, গত সোমবার শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবন ও অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে “কমপ্লিট শাটডাউন” ঘোষণা করেন। ফলে চার দিন ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, তারা নিরুপায় হয়েই এই কঠোর আন্দোলনের পথে নেমেছেন।
একজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা মানসম্মত শিক্ষা চাই। প্রতিটি ব্যাচে ২৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নেই। ৫০টি অধ্যাপকের পদের বিপরীতে মাত্র ছয়জন রয়েছেন। এতে আমাদের পড়াশোনা ভয়াবহভাবে ব্যাহত হচ্ছে।”
অপরদিকে, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার স্বীকার করেন যে, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। তিনি বলেন, “আমি বিষয়টি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ডেন্টাল অনুষদের প্রফেশনাল পরীক্ষা এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির ভর্তি পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটলে এর দায় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। দাবি পূরণ না হলে কমপ্লিট শাটডাউন চলবে বলে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।