ঢাকা ১১:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝালকাঠিতে মুগ ডালের রেকর্ড ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৮:৪৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

 

ঝালকাঠিতে চলতি মৌসুমে মুগ ডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। জেলার কৃষকরা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুগ ডাল সরবরাহ করছেন। এতে ভালো দাম পাচ্ছেন তারা এবং মুগ ডাল চাষে আগ্রহও বাড়ছে। ফলে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে প্রশান্তির হাসি।

প্রান্তিক চাষিরা জানিয়েছেন, কৃষি বিভাগের সময়মতো বীজ ও প্রশিক্ষণ সহায়তার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে পুরুষদের পাশাপাশি নারী চাষিদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারীরা পরিশ্রম করছেন মুগ ডাল চাষে। ফলন ভালো হওয়ায় এবং লাভজনক হওয়ায় নতুন কৃষি উদ্যোক্তারাও আগ্রহী হচ্ছেন এই চাষে।

জেলার চারটি উপজেলায় মুগ ডাল আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ঝালকাঠি সদরে ৬২৫ হেক্টর, নলছিটিতে ৬৫৫ হেক্টর, রাজাপুরে ৬৬০ হেক্টর এবং কাঁঠালিয়ায় ৬৬৫ হেক্টর জমিতে আবাদ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে বাস্তবে আবাদ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগ আশা করছে, এই আবাদ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন মুগ ডাল উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৪৫ কোটি টাকা।

চাষিরা পতিত জমিতে বারি মুগ-৬ ও বারি মুগ-১৪ জাতের মুগ ডাল চাষ করছেন। ফলন আসার পর তিন ধাপে ডাল উত্তোলন করা সম্ভব। কৃষকরা জানান, সেচ ও অতিরিক্ত সার ছাড়াই তারা ভালো ফলন পাচ্ছেন।

ঝালকাঠি সদরের পোনাবালিয়া ইউনিয়নের কৃষক লিটন হোসেন বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে ডাল আবাদ করেছি। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে।’
নলছিটির কুলকাঠি ইউনিয়নের কৃষক রুস্তম আলী বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে ছিল, কৃষি বিভাগের সহযোগিতাও পেয়েছি। তাই এবার লাভ ভালোই হবে।’

মুগ ডালের প্রক্রিয়াজাতকরণে নারীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। হালিমা বেগম বলেন, ‘ক্ষেত থেকে তোলা, মাড়াই, ঝারানো, শুকানো সব কাজই নারীরা করেন।’

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. রিফাত সিকদার বলেন, আধুনিক জাতের মুগ ডাল চাষে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার ও সঠিক পরিচর্যার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। এতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, বাড়ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঝালকাঠিতে মুগ ডালের রেকর্ড ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট সময় ০৮:৪৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

 

ঝালকাঠিতে চলতি মৌসুমে মুগ ডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। জেলার কৃষকরা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুগ ডাল সরবরাহ করছেন। এতে ভালো দাম পাচ্ছেন তারা এবং মুগ ডাল চাষে আগ্রহও বাড়ছে। ফলে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে প্রশান্তির হাসি।

প্রান্তিক চাষিরা জানিয়েছেন, কৃষি বিভাগের সময়মতো বীজ ও প্রশিক্ষণ সহায়তার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে পুরুষদের পাশাপাশি নারী চাষিদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারীরা পরিশ্রম করছেন মুগ ডাল চাষে। ফলন ভালো হওয়ায় এবং লাভজনক হওয়ায় নতুন কৃষি উদ্যোক্তারাও আগ্রহী হচ্ছেন এই চাষে।

জেলার চারটি উপজেলায় মুগ ডাল আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ঝালকাঠি সদরে ৬২৫ হেক্টর, নলছিটিতে ৬৫৫ হেক্টর, রাজাপুরে ৬৬০ হেক্টর এবং কাঁঠালিয়ায় ৬৬৫ হেক্টর জমিতে আবাদ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে বাস্তবে আবাদ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগ আশা করছে, এই আবাদ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন মুগ ডাল উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৪৫ কোটি টাকা।

চাষিরা পতিত জমিতে বারি মুগ-৬ ও বারি মুগ-১৪ জাতের মুগ ডাল চাষ করছেন। ফলন আসার পর তিন ধাপে ডাল উত্তোলন করা সম্ভব। কৃষকরা জানান, সেচ ও অতিরিক্ত সার ছাড়াই তারা ভালো ফলন পাচ্ছেন।

ঝালকাঠি সদরের পোনাবালিয়া ইউনিয়নের কৃষক লিটন হোসেন বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে ডাল আবাদ করেছি। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে।’
নলছিটির কুলকাঠি ইউনিয়নের কৃষক রুস্তম আলী বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে ছিল, কৃষি বিভাগের সহযোগিতাও পেয়েছি। তাই এবার লাভ ভালোই হবে।’

মুগ ডালের প্রক্রিয়াজাতকরণে নারীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। হালিমা বেগম বলেন, ‘ক্ষেত থেকে তোলা, মাড়াই, ঝারানো, শুকানো সব কাজই নারীরা করেন।’

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. রিফাত সিকদার বলেন, আধুনিক জাতের মুগ ডাল চাষে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার ও সঠিক পরিচর্যার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। এতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, বাড়ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।