কুষ্টিয়ায় ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে দুই কৃষকের মৃত্যু

- আপডেট সময় ০৫:৩২:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- / 20
কুষ্টিয়ায় ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে দুই কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বুধবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. হোসেন ইমাম।
মঙ্গলবার (২৭ মে) গভীর রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার গবরগাড়া গ্রামে আশরাফুল হোসেন কালু (৩৫) নামের এক কৃষক স্থানীয় একটি আম বাগানে কাজ করছিলেন।
এ সময় হঠাৎ করেই একটি রাসেলস ভাইপার সাপ তাকে কামড় দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালুকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়।
কালু পেশায় কৃষক ছিলেন এবং নাড়া ফকির নামের এক ব্যক্তির ছেলে।
এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চর জগন্নাথপুর গ্রামে কামরুল প্রামানিক (৫০) কলা বাগানে কাজ করছিলেন। সেখানেই রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ের শিকার হন তিনি।
ভাতিজা বিপুল প্রামানিক জানান, কামরুল সাপটিকে মেরে ফেলেন এবং সেটিকে হাতে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। পরে তাকে দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে রাসেলস ভাইপার সাপের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সম্প্রতি কলাপাড়ায় এক কৃষকের জালে ধরা পড়ে এই ভয়ংকর সাপ।
জামালপুরে এক ইউপি সদস্য ভুলবশত রাসেলস ভাইপার ভেবে অজগর সাপকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এমনকি এক বছর আগে এক কামড়ের শিকার রোগীর আঙুলের ক্ষত এখনো সেরে ওঠেনি।
চিকিৎসকরা বলছেন, রাসেলস ভাইপারের বিষ দ্রুত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিপজ্জনক রক্তক্ষরণ, অঙ্গ বিকল বা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটাতে পারে।
তাই কামড়ের পর তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা নেওয়া এবং যথাযথ অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাপে কামড় দিলে বাড়িতে না গিয়ে সরাসরি নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে কুষ্টিয়ার দুই কৃষকের মৃত্যু জনসচেতনতা, চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রস্তুতি এবং পরিবেশগত হস্তক্ষেপের গুরুত্ব আবারও তুলে ধরেছে।
এই ভয়ংকর বাস্তবতা সামনে রেখে রাসেলস ভাইপারের বিস্তার রোধে এবং প্রতিকারে জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।