ঢাকা ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতীয় আগরবাতি আমদানি ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন তৌকির, লড়েছেন শেষ পর্যন্ত উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত: হতাহতের খবর এখনও মেলেনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন: অভিবাসন বিষয়ক বৈঠক হবে বিশেষ গুরুত্বের সাথে ফার্মগেট স্টেশনে মেট্রোরেল আটকে যাওয়ার পর ফের চালু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় ইবি প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন, তদন্তে শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তির আশ্বাস ইকুয়েডরে ভয়াবহ সংঘর্ষ: পিকআপ ট্রাক ও এসইউভিতে নিহত ৯ ৪৮তম বিশেষ বিসিএস: ৫২০৬ জন উত্তীর্ণ ইসরায়েলি সেনার গুলিতে নিহত ৬৭ ফিলিস্তিনি: ত্রাণ নিতে আসার সময় ঘটে এ ঘটনা গাজীপুরে নাসির হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য গ্রেপ্তার

খেলার ছলে নলকূপে কীটনাশক ঢেলে পানি পান, হাসপাতালে ৬ শিশু

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • / 19

ছবি সংগৃহীত

 

ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার কাচারীতলা গ্রামে খেলার সময় নলকূপের পানির সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ৬ শিশু। সোমবার রাত ৯টার দিকে তাদেরকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে ভর্তি শিশুরা হলো- ওই গ্রামের কামিরুল শাহের ছেলে হোসাইন শাহ (৪), সাইফুল শাহের মেয়ে মরিয়ম (৭), সাগর খাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ (৩), হাসান মন্ডলের মেয়ে জান্নাতুল (৯), রতন শাহের ছেলে রোকেয়া (৯) ও মারুফ শাহের ছেলে মার্ফিয়া (৬)। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

শিশুদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার দুপুরের দিকে কাচারীতলা গ্রামের রমজান মন্ডল জমিতে ঘাস মারার কীটনাশক ছিটিয়ে বোতলে কিছু ওষুধ রেখে পাশের আম বাগানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। পরে ভুল করে ওই বোতল ফেলে বাড়িতে চলে যান তিনি। বিকেলে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বাড়ির ছয়টি শিশু বোতলটি কুড়িয়ে পায়। তারা খেলার ছলে বোতলের ওষুধ রাস্তার পাশে থাকা নলকূপের ভেতর ফেলে এবং সেই পানি পান করে।

সন্ধ্যার দিকে রমজান মন্ডল তার ওষুধের বোতল খুঁজতে আসেন। কিছুক্ষণ পর কামিরুল শাহের চার বছরের ছেলে হোসাইন শাহের পেটে ব্যথা শুরু হয়। ওই শিশুর সঙ্গে কথা বলে নলকূপের ধারে গিয়ে কীটনাশকের বোতল পায় অভিভাবকরা। পরক্ষণেই শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাত ৮টার দিকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হোসাইনের সঙ্গে কীটনাশক মিশানো পানি খাওয়া অপর পাঁচ শিশুর বমির পাশাপাশি পেটে ও গলায় ব্যথা শুরু হলে রাতেই তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ছয় শিশুর মধ্যে হোসাইনকে ওয়াশ করা হয়েছে।

শিশু হোসাইনের মা মমতাজ খাতুন বলেন, বাচ্চার পেট ব্যথা শুরু হলেই হরিনাকুন্ডু হাসপাতালে নিই। সেখান থেকে ডাক্তার সদর হাসপাতালে পাঠায়। ওর বিষ ওয়াশ করে বের করা হয়েছে। এখন কী হবে বুঝতে পারছি না।

অপর শিশুর বাবা মারুফ শাহ বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে মেয়েটার পেটে ও গলায় ব্যথা শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর বমি করতে থাকে। তখনই সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখন একটু সুস্থ আছে।

হরিনাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আল আমিন বলেন, একটি শিশু সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালে আসলে তার শরীরে বিষ খাওয়ার আলামত পাওয়া যায়। কিন্তু হাসপাতালে ওয়াশ করার ব্যবস্থা না থাকায় শিশুটিকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেহেদী ইসলাম টিটু বলেন, শিশুরা বিষ খাওয়ার হিস্ট্রি নিয়ে সদর হাসপাতালে এসেছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা প্রাথমিকভাবে শঙ্কামুক্ত মনে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে শিশুদের ভর্তি রাখা হয়েছে।

হরিনাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ রউফ খান বলেন, ঘটনাটি শোনার পর গ্রামটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অসাবধানতাবশত খেলার ছলে শিশুরা নলকূপের পানির সাথে কীটনাশক মিশিয়ে খেয়েছে। তবে বিষয়টি শত্রুতামূলক মনে হচ্ছে না। তবুও আমরা তদন্ত করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

খেলার ছলে নলকূপে কীটনাশক ঢেলে পানি পান, হাসপাতালে ৬ শিশু

আপডেট সময় ০৩:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

 

ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার কাচারীতলা গ্রামে খেলার সময় নলকূপের পানির সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ৬ শিশু। সোমবার রাত ৯টার দিকে তাদেরকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে ভর্তি শিশুরা হলো- ওই গ্রামের কামিরুল শাহের ছেলে হোসাইন শাহ (৪), সাইফুল শাহের মেয়ে মরিয়ম (৭), সাগর খাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ (৩), হাসান মন্ডলের মেয়ে জান্নাতুল (৯), রতন শাহের ছেলে রোকেয়া (৯) ও মারুফ শাহের ছেলে মার্ফিয়া (৬)। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

শিশুদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার দুপুরের দিকে কাচারীতলা গ্রামের রমজান মন্ডল জমিতে ঘাস মারার কীটনাশক ছিটিয়ে বোতলে কিছু ওষুধ রেখে পাশের আম বাগানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। পরে ভুল করে ওই বোতল ফেলে বাড়িতে চলে যান তিনি। বিকেলে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বাড়ির ছয়টি শিশু বোতলটি কুড়িয়ে পায়। তারা খেলার ছলে বোতলের ওষুধ রাস্তার পাশে থাকা নলকূপের ভেতর ফেলে এবং সেই পানি পান করে।

সন্ধ্যার দিকে রমজান মন্ডল তার ওষুধের বোতল খুঁজতে আসেন। কিছুক্ষণ পর কামিরুল শাহের চার বছরের ছেলে হোসাইন শাহের পেটে ব্যথা শুরু হয়। ওই শিশুর সঙ্গে কথা বলে নলকূপের ধারে গিয়ে কীটনাশকের বোতল পায় অভিভাবকরা। পরক্ষণেই শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাত ৮টার দিকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হোসাইনের সঙ্গে কীটনাশক মিশানো পানি খাওয়া অপর পাঁচ শিশুর বমির পাশাপাশি পেটে ও গলায় ব্যথা শুরু হলে রাতেই তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ছয় শিশুর মধ্যে হোসাইনকে ওয়াশ করা হয়েছে।

শিশু হোসাইনের মা মমতাজ খাতুন বলেন, বাচ্চার পেট ব্যথা শুরু হলেই হরিনাকুন্ডু হাসপাতালে নিই। সেখান থেকে ডাক্তার সদর হাসপাতালে পাঠায়। ওর বিষ ওয়াশ করে বের করা হয়েছে। এখন কী হবে বুঝতে পারছি না।

অপর শিশুর বাবা মারুফ শাহ বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে মেয়েটার পেটে ও গলায় ব্যথা শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর বমি করতে থাকে। তখনই সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখন একটু সুস্থ আছে।

হরিনাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আল আমিন বলেন, একটি শিশু সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালে আসলে তার শরীরে বিষ খাওয়ার আলামত পাওয়া যায়। কিন্তু হাসপাতালে ওয়াশ করার ব্যবস্থা না থাকায় শিশুটিকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেহেদী ইসলাম টিটু বলেন, শিশুরা বিষ খাওয়ার হিস্ট্রি নিয়ে সদর হাসপাতালে এসেছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা প্রাথমিকভাবে শঙ্কামুক্ত মনে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে শিশুদের ভর্তি রাখা হয়েছে।

হরিনাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ রউফ খান বলেন, ঘটনাটি শোনার পর গ্রামটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অসাবধানতাবশত খেলার ছলে শিশুরা নলকূপের পানির সাথে কীটনাশক মিশিয়ে খেয়েছে। তবে বিষয়টি শত্রুতামূলক মনে হচ্ছে না। তবুও আমরা তদন্ত করছি।