সেন্ট মার্টিনের সাগরে অবমুক্ত করা হলো ১৮৩টি কাছিমের বাচ্চা
কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে সংরক্ষিত হ্যাচারিতে জন্ম নেওয়া ১৮৩টি কাছিমের বাচ্চাকে অবশেষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। গতকাল বুধবার বিকেলে দ্বীপের পশ্চিম সৈকতে এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যেখানে স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সামাজিক সংগঠন ‘আমার সেন্ট মার্টিন’। সংগঠনটির সমন্বয়ক আলী হায়দার জানান, চলতি বছর দ্বীপের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগঠনের সদস্যরা আট শতাধিক কাছিমের ডিম সংগ্রহ করে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মেরিন পার্ক হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করে। সেখানেই সুরক্ষিত পরিবেশে ডিম ফুটে কাছিমের বাচ্চাগুলো জন্ম নেয়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রায় দুই মাস আগে সংগ্রহ করা ১৮৩টি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে, যা গতকাল সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। এই মহতী উদ্যোগে উপস্থিত ছিলেন ‘আমার সেন্ট মার্টিন’-এর সংগঠক আয়াত উল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মী আবদুল আজিজসহ স্থানীয় কয়েকজন পরিবেশপ্রেমী।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ সামুদ্রিক কাছিমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননকেন্দ্র। কয়েক বছর ধরে সংগঠনটি দ্বীপের সৈকত থেকে কাছিমের ডিম সংগ্রহ করে নিরাপদে সংরক্ষণ ও অবমুক্তকরণের কাজ করছে। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত সংগৃহীত আট শতাধিক ডিমের মধ্যে এক সপ্তাহ আগেও ১৭০টি কাছিমের বাচ্চাকে সাগরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
‘আমার সেন্ট মার্টিন’-এর সমন্বয়ক আলী হায়দার বলেন, “সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে কচ্ছপসহ সব সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য নিরাপদ প্রজনন ও আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা কাজ করছি। পৃথিবীকে মানুষের বসবাসযোগ্য রাখতে হলে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা জরুরি। সেই লক্ষ্যে কাছিমের ডিম সংরক্ষণ ও বাচ্চা ফোটানোর এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।”
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট দূষণে সামুদ্রিক কাছিমের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এই উদ্যোগ শুধু কাছিমের জীবন রক্ষা নয়, বরং সমুদ্রের প্রতিবেশগত ভারসাম্য টিকিয়ে রাখার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় পরিবেশবাদীরা আশা করছেন, এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ কচ্ছপসহ অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য আরও নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হবে।