তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী চীন, সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের হাতে
তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত চীন। বাংলাদেশ সরকার চাইলেই দ্রুত এ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনা সহায়তা পেতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার চীনা দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত বলেন, “তিস্তা নদীর উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়ন হলে তীরবর্তী জনগণের জীবনমানের উন্নতি হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি এবং যেকোনো সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”
তিনি জানান, ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠায়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালে চীন প্রস্তাবের মূল্যায়ন শেষে কিছু সংশোধনীসহ প্রতিবেদন দেয়। তবে এরপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “এই প্রকল্প বাংলাদেশ নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করতে পারে অথবা চীনের সহায়তা নিতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকেই নিতে হবে।” তিস্তা নদী নিয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে তিস্তা পাড়ের জনগণের দুঃখ-দুর্দশার কথা চীন ভালোভাবেই জানে।
চীন জানিয়েছে, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে ১৩টি চীনা কোম্পানি প্রায় ২৩ কোটি ডলার বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে চুক্তি করেছে।
বর্তমানে ৩০টির বেশি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা ভবিষ্যতে ১০০ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে। রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত চীনা শিল্প পার্ক অনুমোদন দেবে, যাতে বিনিয়োগ আরও বাড়ে।
চীনে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশি রোগীদের জন্য নতুন সুযোগ উন্মুক্ত হচ্ছে। গত জানুয়ারিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের চীন সফরের সময় কুনমিং অঞ্চলে বাংলাদেশিদের জন্য তিনটি হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত জানান, উভয় দেশের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, অনুবাদক নিয়োগ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে কাজ চলছে। সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী মার্চ থেকে বাংলাদেশি রোগীরা চীনে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন।