ইসরায়েলে হুথির ক্ষেপণাস্ত্র হামলা,অনাহারে গাজা

- আপডেট সময় ০২:৪৮:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
- / 7
ইয়েমেনের সশস্ত্র হুথিরা ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলে। ইসরায়েল সেনাবাহিনী জানিয়েছেন শুক্রবার তারা ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে সাইরেন বাজার পর ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করে।
হুথি গোষ্ঠী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা জোরদার করেছে, বিশেষ করে মার্চে গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল নতুন করে অভিযান শুরু করলে তারা আক্রমণের মাত্রা বাড়ায়।
ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিয়োথ আহারোনোথ জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ফলে দক্ষিণ নেগেভ ও মৃত সাগর অঞ্চলে সতর্কতামূলক সাইরেন বাজে। এর মধ্যে আরাদ, কিরিয়াত আরবা ও আইন গেদিতে সাইরেন শোনা যায়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অবিরত বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে নভেম্বর থেকে হুথিরা লোহিত সাগর, অ্যাডেন উপসাগর ও আরব সাগরের বাণিজ্যিক জাহাজকেও টার্গেট করে আসছে। তারা বলছে, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি নিপীড়নের প্রতিবাদে তারা এসব হামলা চালাচ্ছে।
জাতিসংঘ ও ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৫৯ হাজার ৬৭৬ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আর আহত হয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৯৬৫ জনেরও বেশি। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে বহু সংখ্যক মানুষ। অপরদিকে
দিনের পর দিন অনাহারে রয়েছে গাজার এক তৃতীয়াংশ মানুষ। এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজার ৯০ হাজার শিশু ও নারী অপুষ্টিতে ভুগছেন। তাদেরকে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেয়া প্রয়োজন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সপ্তাহে গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার অপুষ্টিতে আরও নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। এতে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২২ জনে।
এদিকে ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কোনও প্রকার বাধা দেওয়া হচ্ছে না। তারা ওই পরিস্থিতির জন্য হামাসকে দোষারোপ করছে।
শুক্রবার ইসরায়েলের প্রতি ত্রাণ প্রবেশের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা যে মানবিক বিপর্যয় চলছে অবিলম্বে তা বন্ধের আহ্বান জানায়।
আরও বলেছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে হবে। বেসামরিক নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা আটকে রাখা অগ্রহণযোগ্য বলেও জানিয়েছে দেশগুলো।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, অনেক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদাসীনতা ও সহানুভূতির অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও গ্লোবাল অ্যাসেম্বলিতে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেছেন, খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ২৭ মে থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইসরায়েলি বর্বরতায় এক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মে থেকে গাজায় ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ সংস্থা গাজা হিউম্যানটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। সংস্থাটিতে কাজ করেছেন এমন এক মার্কিন নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি গাজায় যুদ্ধপরাধ হতে দেখেছেন।
তথ্য সূত্র : আনাদুল এজেন্সি ও বিবিসি