ঢাকা ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আবহাওয়ার সতর্কতা: ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস আওয়ামী লীগের আমলে ব্যাংকের ৮০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়ে গেছে অর্থ উপদেষ্টা রেলপথ গুলোকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চায় সরকার আরো ১৪ রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামি ধরতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ওপর হামলা, এসআই গুরুতর আহত নোয়াখালীতে ৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ ২ মাদক কারবারি আটক নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় নিশ্চিত করতেই চার্জশীট দিতে দেরী হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারত নদীর পাড়ে,জঙ্গলে মানুষ ফেলে যাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ লোহাগড়ায় সাপের কামড়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

ডিএনএ পরীক্ষার পর ফরিদপুরে দাফন করা হলো ছোট্ট রাইসাকে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • / 14

ছবি: সংগৃহীত

 

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী রাইসা মনিকে শেষ বিদায় দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পাশের বাজড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দুর্ঘটনার পরপরই নিখোঁজ রাইসার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবের পরীক্ষায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে রাইসা এবং আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত হলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

রাতেই রাইসার পরিবার ঢাকা থেকে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং শুক্রবার ভোরে বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল ৯টায় জানাজা শেষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

১১ বছর বয়সী রাইসা মনি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দুর্ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ না মেলায় পরিবার গভীর উদ্বেগে ছিল। অবশেষে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলে পুরো পরিবার ভেঙে পড়ে শোকে।

রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, “বিমান দুর্ঘটনার পরের দিন, ২২ জুলাই, সিআইডির ডিএনএ দল আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর যখন মেয়ের মরদেহ শনাক্ত হয়, তখন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা রাতেই রওনা দিয়ে সকালে বাড়িতে পৌঁছাই এবং দাফনের আয়োজন করি।”

তিন ভাইবোনের মধ্যে রাইসা ছিল দ্বিতীয়। বড় বোন সিনথিয়া পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছোট ভাই রাফসান শেখ এখনো বয়সে শিশু (৪ বছর)। মেয়েকে হারিয়ে অসহনীয় বেদনায় দিন কাটাচ্ছেন তার বাবা-মা—শাহাবুল শেখ ও মিম আক্তার।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিতে তারা রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করান। রাইসা তৃতীয় শ্রেণিতে এবং বড় বোন সিনথিয়া অষ্টম শ্রেণিতে সেখানে লেখাপড়া করছিল।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান জানান, “রাইসার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রাম স্তব্ধ হয়ে গেছে। যখন মরদেহ বাড়িতে আসে, তখন এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।”

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ৬৯ জন।

এই দুর্ঘটনার পর সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

ডিএনএ পরীক্ষার পর ফরিদপুরে দাফন করা হলো ছোট্ট রাইসাকে

আপডেট সময় ১১:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

 

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী রাইসা মনিকে শেষ বিদায় দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পাশের বাজড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দুর্ঘটনার পরপরই নিখোঁজ রাইসার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবের পরীক্ষায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে রাইসা এবং আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত হলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

রাতেই রাইসার পরিবার ঢাকা থেকে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং শুক্রবার ভোরে বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল ৯টায় জানাজা শেষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

১১ বছর বয়সী রাইসা মনি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দুর্ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ না মেলায় পরিবার গভীর উদ্বেগে ছিল। অবশেষে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলে পুরো পরিবার ভেঙে পড়ে শোকে।

রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, “বিমান দুর্ঘটনার পরের দিন, ২২ জুলাই, সিআইডির ডিএনএ দল আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর যখন মেয়ের মরদেহ শনাক্ত হয়, তখন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা রাতেই রওনা দিয়ে সকালে বাড়িতে পৌঁছাই এবং দাফনের আয়োজন করি।”

তিন ভাইবোনের মধ্যে রাইসা ছিল দ্বিতীয়। বড় বোন সিনথিয়া পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছোট ভাই রাফসান শেখ এখনো বয়সে শিশু (৪ বছর)। মেয়েকে হারিয়ে অসহনীয় বেদনায় দিন কাটাচ্ছেন তার বাবা-মা—শাহাবুল শেখ ও মিম আক্তার।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিতে তারা রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করান। রাইসা তৃতীয় শ্রেণিতে এবং বড় বোন সিনথিয়া অষ্টম শ্রেণিতে সেখানে লেখাপড়া করছিল।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান জানান, “রাইসার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রাম স্তব্ধ হয়ে গেছে। যখন মরদেহ বাড়িতে আসে, তখন এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।”

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ৬৯ জন।

এই দুর্ঘটনার পর সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।