ঝালকাঠির বিলাতি গাবের সুবাস ছড়াচ্ছে দেশের প্রান্তে প্রান্তে, বাড়ছে দেশজুড়ে চাহিদা

- আপডেট সময় ০৩:২২:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / 8
ঝালকাঠির রাজাপুর ও আশপাশের অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ফল বিলাতি গাব, যা সাধারণত ‘গাব’ নামেই পরিচিত, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেখতে অনেকটা আপেলের মতো এই ফলের ত্বক হালকা বাদামি ও লোমশ। ভেতরের অংশ হালকা ক্রিম রঙের এবং খেতে বেশ মিষ্টি ও রসালো। প্রাকৃতিকভাবে গ্রামাঞ্চলে জন্মানো এ ফল ক্যালসিয়াম ও আয়রনে সমৃদ্ধ হওয়ায় বিশেষত গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী।
আষাঢ় মাসের শেষদিকে গাব পেকে ওঠে। গাছের বয়স পাঁচ বছর হলেই ফল ধরতে শুরু করে এবং একটি গাবের ওজন প্রায় ৩০০ গ্রাম হয়। এই মৌসুমে গাবের সুবাসে মুখর হয়ে ওঠে জেলার বিভিন্ন হাটবাজার। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাইকিং করে গ্রাম থেকে গাব সংগ্রহ করেন। ২০টি গাব আকারভেদে কিনে থাকেন ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এরপর পুকুরে ধুয়ে পরিষ্কার করে কলাপাতায় মুড়িয়ে প্লাস্টিক ক্যারেটে করে পাঠানো হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেটের আড়তে।
রাজাপুরের নারিকেলবাড়িয়া ক্লাবে তৈরি মোকাম থেকে প্রতিদিন শত শত গাব দেশের বিভিন্ন শহরে যাত্রীবাহী পরিবহনে সরবরাহ করা হয়। ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম গাব সংগ্রহ করে বিক্রি করেন পাইকার খলিল হাওলাদারের কাছে, যার সঙ্গে আরও ১০–১২ জন স্থানীয় যুবক মৌসুমি ব্যবসায় জড়িত। মোকামেই গাব পরিষ্কার করে প্যাকেট করা হয়। একশ’টি গাব পাইকারি বিক্রি হয় ৭০০-৮০০ টাকায় এবং শহরের আড়তদাররা তা খুচরা বিক্রি করেন ১০-১২ টাকায়।
এলাকাবাসীরা জানান, গাব চাষের জন্য আলাদা পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। পাখির মাধ্যমে বীজ ছড়িয়ে পড়ে এবং গাছ আপনাতেই বড় হয়। কেমিক্যাল ও ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় এই ফলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অতিথি আপ্যায়নেও এখন স্থান পাচ্ছে এই ফল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির উর্বর মাটিতে গাবের ফলন ভালো হয় এবং প্রতি বছরই বাম্পার ফলন দেখা যায়। বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ হচ্ছে এই ফল।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান সানি বলেন, ‘গাব একটি পুষ্টিকর, ভেজাল ও ফরমালিনমুক্ত দেশীয় ফল। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যসম্মত।’