গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে নিহত ৯৪, আহত শতাধিক

- আপডেট সময় ১২:৪০:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
- / 0
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার সামরিক অভিযানে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় এই অঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনীর চালানো সহিংস হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক। একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৩৬৭ জন। ফলে চলমান সংঘাতে নিহতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ৬৭৭ জনে। এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা আনাদোলু, যা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) প্রকাশিত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনো নতুন করে মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে আছেন বা রাস্তায় প্রাণহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। ইসরাইলি ঘেরাও ও হামলার কারণে উদ্ধারকর্মীরা এসব জায়গায় পৌঁছাতে পারছেন না, ফলে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, গাজায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে মানবিক সহায়তা গ্রহণের সময়ও ফিলিস্তিনিরা নিরাপদ নন। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে শুধুমাত্র ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ২৬ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩২ জন। চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত এই ধরনের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭৭ জন, আহত হয়েছেন প্রায় ৫ হাজার ৬৬৬ জন।
যদিও চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসরাইল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল, কিন্তু সেই চুক্তি স্থায়ী হয়নি। ১৮ মার্চ ইসরাইল আবারও গাজায় পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করে। ওই দিন থেকেই নতুন করে শুরু হওয়া সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ হাজার ৯২২ জন।
গাজার পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের রূপ নিয়েছে। পানি, খাবার, চিকিৎসাসেবা, আশ্রয়—সবকিছুরই তীব্র সংকট চলছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে হাসপাতাল, স্কুল ও ঘরবাড়ি। শিশু, নারী, বৃদ্ধ কেউই এই সহিংসতা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা পরিস্থিতিকে “সহ্যসীমার বাইরে” বলে আখ্যা দিয়েছে এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে স্বাধীন তদন্তের দাবি তুলেছে।
এই সহিংসতা কবে থামবে, কেউ জানে না। কিন্তু প্রতিদিন অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে বিশ্ব আবারও দেখছে, একপাক্ষিক আগ্রাসন কীভাবে একটি জাতিকে অস্তিত্ব সংকটে ফেলতে পারে।