রাখাইনে নৌঘাঁটি দখল নিয়ে তীব্র লড়াইয়ে মুখোমুখি জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মি

- আপডেট সময় ০৪:০৮:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / 5
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কিয়াউকফিউ এলাকায় বিদ্রোহী আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে গত ছয় দিন ধরে তীব্র লড়াই চলছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, আরাকান আর্মি কিয়াউকফিউর দনিয়াওয়াদ্দি নৌঘাঁটির নিকটবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক চৌকি ঘিরে ফেলেছে। সংঘর্ষ চলমান অবস্থায় এলাকায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
জান্তা বাহিনী বিদ্রোহীদের ঠেকাতে বিভিন্ন এলাকায় ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দনিয়াওয়াদ্দি নৌঘাঁটি আরাকান আর্মির দখলে গেলে জান্তা বাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুরুতর হুমকির মুখে পড়বে। সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির হাতে রয়েছে।
অন্যদিকে, দেশের উত্তরের শান রাজ্যে কিছুটা সফলতা পেয়েছে জান্তা বাহিনী। দীর্ঘ সামরিক অভিযানের পর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর পুনর্দখল করেছে সেনাবাহিনী। এই শহরটি মান্দালয়-লাশিও-মুসে বাণিজ্যপথের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। এই শহরের পতন বিদ্রোহীদের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর শান রাজ্যে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে জান্তা বাহিনীকে আরও বড় সামরিক অভিযান চালাতে হবে।
এদিকে মিয়ানমারের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চীন চালাচ্ছে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা। জান্তা সমর্থিত দলগুলোকে একের পর এক আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বেইজিং। বিশ্লেষকদের মতে, এটি সামরিক সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনারই অংশ।
দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি জান্তা সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে ‘নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র’ বাস্তবায়নের কৌশল শিখিয়ে দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়াকে নির্বাচনী পরিবেশের জন্য অস্বাভাবিক বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চলমান লড়াই, কূটনৈতিক চাপে জর্জরিত মিয়ানমার এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে। রাখাইন ও উত্তর শানে একদিকে বিদ্রোহীদের অগ্রগতি, অন্যদিকে জান্তার জবাবি অভিযান উভয়ই দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।