বিহারে ডাইনি বিদ্যার চর্চায় একই পরিবারের ৫ জনকে পিটিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

- আপডেট সময় ০১:৩৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
- / 9
ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলায় ডাইনি বিদ্যার চর্চার অভিযোগ তুলে একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ব বিহারের প্রত্যন্ত তেতগামা গ্রামে রোববার সন্ধ্যায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন বাবু লাল ওরাঁও (৫০), তার মা কান্তো দেবী (৭০), স্ত্রী সীতা দেবী (৪৫), ছেলে মনজিত কুমার (২৫) ও পুত্রবধূ রাণী দেবী (২২)। এই হত্যাকাণ্ডে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাবু লালের ১৬ বছর বয়সী ছোট ছেলে, যিনি পালিয়ে গিয়ে পুলিশকে সব ঘটনা জানিয়েছেন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহত বাবু লাল ওরাঁও দীর্ঘদিন ধরে লোকজ চিকিৎসা বা ঝাড়ফুঁকের চর্চা করতেন। সম্প্রতি একই গ্রামের রামদেব ওরাঁওয়ের পরিবারের এক শিশু মারা গেলে এবং আরেক শিশু গুরুতর অসুস্থ হলে তার পরিবারের বিরুদ্ধে ‘ডাইনি বিদ্যা’ চর্চার অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা। এরপরই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা বাবু লালের পরিবারের পাঁচজনকে বেধড়ক মারধর করে এবং বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।
পূর্ণিয়া সদরের এসডিপিও পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে কুসংস্কার ও ডাইনি বিদ্যার অভিযোগ স্পষ্টভাবে জড়িত। ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং পুরো গ্রাম এ অপরাধে অংশ নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”
তিনি জানান, ঘটনায় জড়িত চারজনের নাম এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য ও পালিয়ে বেঁচে যাওয়া কিশোরের তথ্যে ইঙ্গিত মিলেছে, পুরো গ্রামবাসী কোনো না কোনোভাবে এ ঘটনায় যুক্ত।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিহারের বিরোধীদলীয় নেতা ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, “পূর্ণিয়ায় একই পরিবারের পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। বিহারে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে, কেউ দায় নিচ্ছে না।”
বিহার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ কুমার বলেন, “গরিব, দলিত এবং প্রান্তিক মানুষ আজ সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ। এই ঘটনায় আবার প্রমাণ হলো বিহারে জঙ্গলরাজ চলছে।”
এই নির্মম হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে গ্রামে ব্যাপক তল্লাশি চলছে এবং তদন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।