০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আমলাদের দায়িত্ব কমিয়ে আনা হবে: আমীর খসরু শাপলা দেওয়ার সুযোগ নেই, অন্য প্রতীক দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি: ইসি সচিব হানিফসহ ৪ জনের অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানি আজ পারমাণবিক চালিত আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে পরীক্ষার ঘোষণা পুতিনের নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি

বিহারে ডাইনি বিদ্যার চর্চায় একই পরিবারের ৫ জনকে পিটিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:৩৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
  • / 128

ছবি সংগৃহীত

 

ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলায় ডাইনি বিদ্যার চর্চার অভিযোগ তুলে একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ব বিহারের প্রত্যন্ত তেতগামা গ্রামে রোববার সন্ধ্যায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন বাবু লাল ওরাঁও (৫০), তার মা কান্তো দেবী (৭০), স্ত্রী সীতা দেবী (৪৫), ছেলে মনজিত কুমার (২৫) ও পুত্রবধূ রাণী দেবী (২২)। এই হত্যাকাণ্ডে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাবু লালের ১৬ বছর বয়সী ছোট ছেলে, যিনি পালিয়ে গিয়ে পুলিশকে সব ঘটনা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহত বাবু লাল ওরাঁও দীর্ঘদিন ধরে লোকজ চিকিৎসা বা ঝাড়ফুঁকের চর্চা করতেন। সম্প্রতি একই গ্রামের রামদেব ওরাঁওয়ের পরিবারের এক শিশু মারা গেলে এবং আরেক শিশু গুরুতর অসুস্থ হলে তার পরিবারের বিরুদ্ধে ‘ডাইনি বিদ্যা’ চর্চার অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা। এরপরই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা বাবু লালের পরিবারের পাঁচজনকে বেধড়ক মারধর করে এবং বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।

পূর্ণিয়া সদরের এসডিপিও পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে কুসংস্কার ও ডাইনি বিদ্যার অভিযোগ স্পষ্টভাবে জড়িত। ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং পুরো গ্রাম এ অপরাধে অংশ নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”

তিনি জানান, ঘটনায় জড়িত চারজনের নাম এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য ও পালিয়ে বেঁচে যাওয়া কিশোরের তথ্যে ইঙ্গিত মিলেছে, পুরো গ্রামবাসী কোনো না কোনোভাবে এ ঘটনায় যুক্ত।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিহারের বিরোধীদলীয় নেতা ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, “পূর্ণিয়ায় একই পরিবারের পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। বিহারে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে, কেউ দায় নিচ্ছে না।”

বিহার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ কুমার বলেন, “গরিব, দলিত এবং প্রান্তিক মানুষ আজ সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ। এই ঘটনায় আবার প্রমাণ হলো বিহারে জঙ্গলরাজ চলছে।”

এই নির্মম হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে গ্রামে ব্যাপক তল্লাশি চলছে এবং তদন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

বিহারে ডাইনি বিদ্যার চর্চায় একই পরিবারের ৫ জনকে পিটিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

আপডেট সময় ০১:৩৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

 

ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলায় ডাইনি বিদ্যার চর্চার অভিযোগ তুলে একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ব বিহারের প্রত্যন্ত তেতগামা গ্রামে রোববার সন্ধ্যায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন বাবু লাল ওরাঁও (৫০), তার মা কান্তো দেবী (৭০), স্ত্রী সীতা দেবী (৪৫), ছেলে মনজিত কুমার (২৫) ও পুত্রবধূ রাণী দেবী (২২)। এই হত্যাকাণ্ডে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাবু লালের ১৬ বছর বয়সী ছোট ছেলে, যিনি পালিয়ে গিয়ে পুলিশকে সব ঘটনা জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহত বাবু লাল ওরাঁও দীর্ঘদিন ধরে লোকজ চিকিৎসা বা ঝাড়ফুঁকের চর্চা করতেন। সম্প্রতি একই গ্রামের রামদেব ওরাঁওয়ের পরিবারের এক শিশু মারা গেলে এবং আরেক শিশু গুরুতর অসুস্থ হলে তার পরিবারের বিরুদ্ধে ‘ডাইনি বিদ্যা’ চর্চার অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা। এরপরই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা বাবু লালের পরিবারের পাঁচজনকে বেধড়ক মারধর করে এবং বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।

পূর্ণিয়া সদরের এসডিপিও পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে কুসংস্কার ও ডাইনি বিদ্যার অভিযোগ স্পষ্টভাবে জড়িত। ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং পুরো গ্রাম এ অপরাধে অংশ নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”

তিনি জানান, ঘটনায় জড়িত চারজনের নাম এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য ও পালিয়ে বেঁচে যাওয়া কিশোরের তথ্যে ইঙ্গিত মিলেছে, পুরো গ্রামবাসী কোনো না কোনোভাবে এ ঘটনায় যুক্ত।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিহারের বিরোধীদলীয় নেতা ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, “পূর্ণিয়ায় একই পরিবারের পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। বিহারে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে, কেউ দায় নিচ্ছে না।”

বিহার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ কুমার বলেন, “গরিব, দলিত এবং প্রান্তিক মানুষ আজ সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ। এই ঘটনায় আবার প্রমাণ হলো বিহারে জঙ্গলরাজ চলছে।”

এই নির্মম হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে গ্রামে ব্যাপক তল্লাশি চলছে এবং তদন্ত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।