মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের আগ্রাসন, ২০ মাসে ৩৫ হাজার হামলা : রিপোর্ট

- আপডেট সময় ১০:০১:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
- / 33
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন নতুন মাত্রা পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক সহায়তায় দেশটি প্রতিবেশী একের পর এক দেশে বোমাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২০ মাসে ফিলিস্তিন ছাড়াও লেবানন, সিরিয়া, ইরান ও ইয়েমেনে ৩৫ হাজারের বেশি হামলা চালিয়েছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন বাহিনী।
গাজায় বর্বরোচিত গণহত্যায় নারী ও শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনই নতুন করে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ, ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা এসিএলইডি (Armed Conflict Location and Event Data Project) জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ইসরাইল ফিলিস্তিনে ১৮ হাজার ২৩৫ বার, লেবাননে ১৫ হাজার ৫২০, সিরিয়ায় ৬১৬, ইরানে ৫৮ এবং ইয়েমেনে ৩৯টি হামলা চালিয়েছে।
পশ্চিম তীরে চলমান অভিযানে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ধ্বংস করা হয়েছে বহু ভবন। নিহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে রয়েছে ২০০’রও বেশি শিশু। লেবাননে ইসরাইলি হামলা ও হিজবুল্লাহর পাল্টা আক্রমণে নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৬০০’র বেশি সংঘর্ষ হয়েছে, যার ৮৩ শতাংশ শুরু করে ইসরাইল।
সিরিয়ায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতনের পর ইসরাইলের হামলা বেড়ে যায়। দেশটির বিমানঘাঁটি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও কৌশলগত অবকাঠামোয় চালানো প্রায় ২০০ হামলায় সিরিয়ার সামরিক শক্তি বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়ে।
ইয়েমেনেও বেড়েছে বিমান হামলা। হুতি নিয়ন্ত্রিত রাজধানী সানা, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে, ইরানে চালানো সাম্প্রতিক বিমান ও ড্রোন হামলায় পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির দাবি করেছে তেল আবিব।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলের এই বিস্তৃত সামরিক তৎপরতা কেবল সীমান্ত নয়, গোটা অঞ্চলের ভূরাজনীতি, নিরাপত্তা ও মানবিক কাঠামোকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। ইসরাইলের কাছে থাকা উন্নত মার্কিন যুদ্ধবিমান এবং দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবস্থার কারণেই এসব হামলা সম্ভব হচ্ছে।
তারা মনে করেন, এই সংঘাত থামাতে হলে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহলের সমন্বিত কূটনৈতিক উদ্যোগ। তা না হলে, মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা দীর্ঘমেয়াদি ও আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।