ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

ইরানে হামলার অনুমোদন ট্রাম্পের, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:২০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
  • / 6

ছবি সংগৃহীত

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সামরিক হামলার পরিকল্পনায় নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছেন, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস।

সিবিএসকে দেওয়া এক শীর্ষ গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প চান ইরান যেন পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসে। এই সম্ভাবনা একেবারে শেষ না হওয়া পর্যন্ত হামলা স্থগিত রাখা হয়েছে। ট্রাম্প বর্তমানে ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ‘ফোর্দো’তে হামলার সম্ভাবনা বিবেচনা করছেন।

অন্যদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি স্পষ্টভাবে ট্রাম্পের ‘আত্মসমর্পণের আহ্বান’ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা ভীত নই, আমরা প্রতিক্রিয়া জানাব। যেকোনো মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। ইরানি জাতি কখনো আত্মসমর্পণ করবে না।”

ট্রাম্প অবশ্য এসব হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দেননি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি করতে পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করব।”

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ইরানে হামলার পরিকল্পনায় সবুজ সংকেত দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ইসরায়েল ইরানের একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এর পাল্টা জবাবে ইরান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করেছে।

এই উত্তেজনার মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি বুধবার প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসেন এবং জাতিকে সাহসী প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানান। এদিকে জাতিসংঘে ইরানের মিশন সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে লিখেছে, “হোয়াইট হাউসের দরজায় কেউ কাকুতি-মিনতি করে মাথা নত করেনি।”

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দিলে পেন্টাগন পুরোপুরি প্রস্তুত। ইতোমধ্যে ইউএসএস নিমিটজ বহর গালফ অঞ্চলের দিকে রওনা দিয়েছে এবং ইউএসএস কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বে একটি স্ট্রাইক গ্রুপ সেখানে অবস্থান করছে। ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে এফ-২২ ও এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান ও জ্বালানি ট্যাঙ্কার পাঠানো হচ্ছে।

ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির মধ্যে বৃহস্পতিবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে ইরান ইস্যু হবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

তবে এখনো যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটেনের ডিয়েগো গার্সিয়া বা সাইপ্রাসে অবস্থিত ঘাঁটি ব্যবহার করার অনুরোধ জানায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এদিকে ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছে দেশটির জেরুজালেম দূতাবাস। তবে কীভাবে ও কতজনকে সরানো হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৩৯ জনই বেসামরিক। ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন আরও ২৪ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইরানে হামলার অনুমোদন ট্রাম্পের, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য

আপডেট সময় ০৫:২০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সামরিক হামলার পরিকল্পনায় নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছেন, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস।

সিবিএসকে দেওয়া এক শীর্ষ গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প চান ইরান যেন পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসে। এই সম্ভাবনা একেবারে শেষ না হওয়া পর্যন্ত হামলা স্থগিত রাখা হয়েছে। ট্রাম্প বর্তমানে ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ‘ফোর্দো’তে হামলার সম্ভাবনা বিবেচনা করছেন।

অন্যদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি স্পষ্টভাবে ট্রাম্পের ‘আত্মসমর্পণের আহ্বান’ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা ভীত নই, আমরা প্রতিক্রিয়া জানাব। যেকোনো মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। ইরানি জাতি কখনো আত্মসমর্পণ করবে না।”

ট্রাম্প অবশ্য এসব হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দেননি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি করতে পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করব।”

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ট্রাম্প ইতোমধ্যেই ইরানে হামলার পরিকল্পনায় সবুজ সংকেত দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ইসরায়েল ইরানের একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এর পাল্টা জবাবে ইরান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করেছে।

এই উত্তেজনার মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি বুধবার প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসেন এবং জাতিকে সাহসী প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানান। এদিকে জাতিসংঘে ইরানের মিশন সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে লিখেছে, “হোয়াইট হাউসের দরজায় কেউ কাকুতি-মিনতি করে মাথা নত করেনি।”

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দিলে পেন্টাগন পুরোপুরি প্রস্তুত। ইতোমধ্যে ইউএসএস নিমিটজ বহর গালফ অঞ্চলের দিকে রওনা দিয়েছে এবং ইউএসএস কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বে একটি স্ট্রাইক গ্রুপ সেখানে অবস্থান করছে। ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে এফ-২২ ও এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান ও জ্বালানি ট্যাঙ্কার পাঠানো হচ্ছে।

ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির মধ্যে বৃহস্পতিবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে ইরান ইস্যু হবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

তবে এখনো যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটেনের ডিয়েগো গার্সিয়া বা সাইপ্রাসে অবস্থিত ঘাঁটি ব্যবহার করার অনুরোধ জানায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এদিকে ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছে দেশটির জেরুজালেম দূতাবাস। তবে কীভাবে ও কতজনকে সরানো হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৩৯ জনই বেসামরিক। ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন আরও ২৪ জন।