ঢাকা ১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবল বর্ষণে প্রাণহানি বেড়ে ৩৪

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩৪:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • / 13

ছবি সংগৃহীত

 

উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্থিতি। গত দুই দিনে আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম ও সিকিমে প্রবল বর্ষণ এবং ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৪ জন। প্রশাসনের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে জানানো হয়েছে, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে বহু অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক গ্রাম এখন কার্যত একঘরে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করতে ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং আসাম রাইফেলসের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। আসামের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ১৯টি জেলায় ৭৬৪টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে রাজ্য প্রশাসন। ঘরবাড়ি পানির নিচে চলে যাওয়ায় বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

মণিপুরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। রাজ্যটির সমতল এলাকার দুটি জেলা ইম্ফল পূর্ব ও ইম্ফল পশ্চিম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে বন্যা ও ধসের ঝুঁকি বাড়ায় সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে।

অন্যদিকে অরুণাচল প্রদেশে ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯ জন। এর মধ্যে পূর্ব কামেং জেলায় সাতজন এবং জিরো ভ্যালিতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মেঘালয়, মিজোরাম ও সিকিমেও দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় ধসের সম্ভাবনা থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বন্যা ও ভূমিধসের বিষয়ে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

দুর্যোগে বিপর্যস্ত রাজ্যগুলোতে টানা উদ্ধার অভিযান এবং ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রম চলছে। তবে বৈরী আবহাওয়া এবং বিচ্ছিন্ন যোগাযোগের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক এলাকাতেই এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিভিন্ন রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করছে। ত্রাণসামগ্রী, পানীয় জল, ওষুধ এবং অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতেও জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবল বর্ষণে প্রাণহানি বেড়ে ৩৪

আপডেট সময় ১২:৩৪:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

 

উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্থিতি। গত দুই দিনে আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম ও সিকিমে প্রবল বর্ষণ এবং ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৪ জন। প্রশাসনের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে জানানো হয়েছে, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে বহু অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক গ্রাম এখন কার্যত একঘরে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করতে ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং আসাম রাইফেলসের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। আসামের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ১৯টি জেলায় ৭৬৪টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে রাজ্য প্রশাসন। ঘরবাড়ি পানির নিচে চলে যাওয়ায় বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

মণিপুরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। রাজ্যটির সমতল এলাকার দুটি জেলা ইম্ফল পূর্ব ও ইম্ফল পশ্চিম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে বন্যা ও ধসের ঝুঁকি বাড়ায় সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে।

অন্যদিকে অরুণাচল প্রদেশে ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯ জন। এর মধ্যে পূর্ব কামেং জেলায় সাতজন এবং জিরো ভ্যালিতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মেঘালয়, মিজোরাম ও সিকিমেও দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় ধসের সম্ভাবনা থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বন্যা ও ভূমিধসের বিষয়ে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

দুর্যোগে বিপর্যস্ত রাজ্যগুলোতে টানা উদ্ধার অভিযান এবং ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রম চলছে। তবে বৈরী আবহাওয়া এবং বিচ্ছিন্ন যোগাযোগের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক এলাকাতেই এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিভিন্ন রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করছে। ত্রাণসামগ্রী, পানীয় জল, ওষুধ এবং অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতেও জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।