০৬:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
শিশু সাজিদের মৃত্যু: ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মানুষকে ভয় দেখাতেই এসব হামলা: রিজওয়ানা আটকের পর যা বললেন গুলিতে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক হান্নান মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থাই–কাম্বোডিয়া সীমান্তে পুনরায় উত্তেজনা: অস্ত্রবিরতি ভেঙে বিমান হামলা, নিহত ১ সৈন্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দল জার্মান সেনাবাহিনী বাড়ছে: ২০৩৫ সালের মধ্যে ২,৬০,০০০ সক্রিয় সদস্যের লক্ষ্য অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের কঠিনতম পানি প্রকল্প সম্পন্ন করল ইরান

গুলশানে তারেক রহমানের সঙ্গে ঢাবি সাদা দলের শিক্ষকদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:০৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • / 103

ছবি সংগৃহীত

 

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাদা দলের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

গতকাল সোমবার (২৬ মে) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার। তাদের সঙ্গে ঢাবির দেড় শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অবস্থা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। সাদা দলের শিক্ষকরা গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের ‘ফ্যাসিস্ট’ শাসন এবং ভিন্নমতের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো নির্যাতন ও হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগপন্থী ঢাবি প্রশাসন ভিন্নমতের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের নানা কৌশল অবলম্বন করেছে।

শিক্ষকরা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও ক্যাম্পাসে সরকারের ছায়া থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া যায়নি। সেই প্রেক্ষাপটে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও স্বাধীন চিন্তার শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার তাগিদ দেন।

তারেক রহমান মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকদের বক্তব্য শোনেন এবং বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূতিকাগার। অতীতেও এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের গণআন্দোলনে তাঁদের অবদান ছিল অতুলনীয়। এই ক্যাম্পাস থেকেই আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, যার মাধ্যমে দেশ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়।”

তিনি আরও বলেন, “তবে ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার এখনও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই অতীতের মতোই ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সামনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বপর্যন্ত আমাদের সবাইকে জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. তাহমিনা আক্তার টফি, অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান, অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম জাহিদ, অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন, অধ্যাপক ড. আ ফ ম মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদসহ আরও অনেকে।

এছাড়া বিভিন্ন হলের প্রভোস্টগণ এবং অনুষদের ডিনরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ, জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট দেবাশীষ পাল, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, শামসুন্নাহার হলের অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের অধ্যাপক ড. নাজমুল হোসেন, কুয়েম মৈত্রী হলের অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা ও বিজয় একাত্তর হলের অধ্যাপক ড. এসএম আলী রেজা।

বৈঠকের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতি ও শিক্ষাঙ্গনের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে ঢাবি শিক্ষকদের সক্রিয় ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলনে তাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন আশাবাদ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

গুলশানে তারেক রহমানের সঙ্গে ঢাবি সাদা দলের শিক্ষকদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

আপডেট সময় ০১:০৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

 

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাদা দলের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

গতকাল সোমবার (২৬ মে) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার। তাদের সঙ্গে ঢাবির দেড় শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অবস্থা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। সাদা দলের শিক্ষকরা গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের ‘ফ্যাসিস্ট’ শাসন এবং ভিন্নমতের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো নির্যাতন ও হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগপন্থী ঢাবি প্রশাসন ভিন্নমতের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের নানা কৌশল অবলম্বন করেছে।

শিক্ষকরা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও ক্যাম্পাসে সরকারের ছায়া থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া যায়নি। সেই প্রেক্ষাপটে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও স্বাধীন চিন্তার শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার তাগিদ দেন।

তারেক রহমান মনোযোগ দিয়ে শিক্ষকদের বক্তব্য শোনেন এবং বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূতিকাগার। অতীতেও এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের গণআন্দোলনে তাঁদের অবদান ছিল অতুলনীয়। এই ক্যাম্পাস থেকেই আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, যার মাধ্যমে দেশ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়।”

তিনি আরও বলেন, “তবে ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার এখনও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই অতীতের মতোই ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সামনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বপর্যন্ত আমাদের সবাইকে জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. তাহমিনা আক্তার টফি, অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান, অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম জাহিদ, অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন, অধ্যাপক ড. আ ফ ম মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদসহ আরও অনেকে।

এছাড়া বিভিন্ন হলের প্রভোস্টগণ এবং অনুষদের ডিনরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ, জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট দেবাশীষ পাল, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, শামসুন্নাহার হলের অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের অধ্যাপক ড. নাজমুল হোসেন, কুয়েম মৈত্রী হলের অধ্যাপক ড. মাহবুবা সুলতানা ও বিজয় একাত্তর হলের অধ্যাপক ড. এসএম আলী রেজা।

বৈঠকের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতি ও শিক্ষাঙ্গনের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে ঢাবি শিক্ষকদের সক্রিয় ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলনে তাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন আশাবাদ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।