দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে রাজশাহী নার্সিং কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

- আপডেট সময় ০৪:২০:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
- / 4
রাজশাহী নার্সিং কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ মোসা. মতিয়ারা খাতুন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে শিক্ষার্থীরা এই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, হামলার শিকার হয়েও উল্টো তাঁদেরই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার কলেজের ডিপ্লোমা (সিনিয়র স্টাফ নার্স) ও বিএসসি নার্সিং (বেসিক) কোর্সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র বিরোধের জেরে সংঘর্ষ ঘটে। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা বিএসসি ডিগ্রিকে বিএ সমমান দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন, অপরদিকে বিএসসি শিক্ষার্থীরা এ দাবির বিরোধিতা করছেন। এই দ্বন্দ্ব থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন, যাঁদের মধ্যে ছয়জন গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে গিয়েও বিএসসি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজ বন্ধের ঘোষণা দেয়। অধ্যক্ষ মতিয়ারা খাতুন বলেন, “১৬ মে ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। আরও বিশৃঙ্খলা হলে আমি সামাল দিতে পারব না। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই সমন্বয় করে কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
বিএসসি নার্সিং চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও কলেজের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম খান জানান, “গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশব্যাপী বিভিন্ন নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীরা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে। আমাদের আন্দোলন চলাকালীন বহিরাগত কিছু সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী কলেজে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, হামলায় রক্তাক্ত হওয়ার পর এখন হল ছাড়ার নির্দেশ অমানবিক। দূরের শিক্ষার্থীরা হঠাৎ কোথায় যাবে, সেই প্রশ্নও তোলেন অনেকে।
শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে তাঁরা অনশন কর্মসূচিতে যাবেন। আন্দোলন চলবে বলে তারা জানিয়েছেন।