ঢাকা ০৮:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতিসংঘের জুলাই অভ্যুত্থান রিপোর্টকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে সংরক্ষণে রুল জারি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইইউ-এর ১৭তম প্যাকেজের নিষেধাজ্ঞা: তুরস্ক সহ একাধিক দেশও এর অন্তর্ভুক্ত সুন্দরবন সুরক্ষায় নতুন কৌশলে বন বিভাগ, ফাঁদ জমা দিলে মিলছে পুরস্কার ভারতের অরুণাচলের ২৭ জায়গার নতুন নামকরণ করল চীন ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা নিয়ে সৌদির পূর্ণ সমর্থন আছে: সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনেতাদের সংলাপে আহ্বান নতুন পোপ লিও চতুর্দশের ভিসা সংকটে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে যাত্রী কমেছে, কমেছে রাজস্ব আয় মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৪৪ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করলো বিএসএফ ডিপ্লোমা নার্সিংকে ডিগ্রির মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে শাহবাগ নার্সিং শিক্ষার্থীদের অবরোধ আইপিএলে ৬ কোটি রুপিতে মোস্তাফিজকে দলে নিল দিল্লি ক্যাপিটালস

গাজায় পূর্ণশক্তি নিয়ে অভিযান চালাতে যাচ্ছে ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:০০:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / 7

ছবি সংগৃহীত

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পূর্ণশক্তি নিয়ে গাজায় প্রবেশ করবে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তার দপ্তর এই তথ্য জানায়।

সোমবার রাতে আহত রিজার্ভ সেনাদের সঙ্গে এক বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, “শিগগিরই আমরা পূর্ণশক্তি নিয়ে অভিযানে নামব। এই অভিযান শেষ করা মানে হামাসকে পরাজিত করা, অর্থাৎ তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করা।” তিনি আরও বলেন, “এই যুদ্ধে থামার কোনো পরিস্থিতি নেই। হয়তো মাঝেমধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হতে পারে, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যাব।”

গত ১৯ জানুয়ারি হামাসের সঙ্গে যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল, সেটির পর গাজায় আবার বড় আকারে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে। চলতি মাসের শুরুতেই ইসরায়েল সরকার গাজায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারি কর্মকর্তারা গাজায় দীর্ঘমেয়াদি সামরিক উপস্থিতির পরিকল্পনার কথাও প্রকাশ করেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, এই নতুন পরিকল্পিত অভিযান গাজার অধিকাংশ বাসিন্দাকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪ লাখ গাজাবাসীর মধ্যে প্রায় সবাই অন্তত একবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে। হামাসের ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার পর থেকেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, “স্বেচ্ছামূলক স্থানান্তর কর্মসূচি হবে আমাদের অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য।”

এদিকে, ইসরায়েলের কয়েকজন মন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি পুরোনো প্রস্তাব সামনে এনেছেন। সেখানে গাজার জনগণকে স্বেচ্ছায় জর্দান বা মিসরের মতো প্রতিবেশী দেশে চলে যাওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। তবে কায়রো, আম্মানসহ আরব বিশ্ব এবং ফিলিস্তিনিরা এই প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

সোমবারের বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা এমন একটি প্রশাসন গড়ে তুলেছি, যারা গাজাবাসীদের চলে যেতে সহায়তা করবে। কিন্তু আমাদের এমন দেশ দরকার, যারা তাদের গ্রহণ করতে রাজি থাকবে। আমরা এখন সেই দেশগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।” তার মতে, যদি বিকল্প দেওয়া হয়, তবে “৫০ শতাংশের বেশি ফিলিস্তিনি গাজা ছেড়ে যাবে।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় এক হাজার ২১৮ জন ইসরায়েলি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। হামাস ওই হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল, যাদের মধ্যে এখনো ৫৭ জন গাজায় রয়েছে এবং ৩৪ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।

এর প্রতিশোধে ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তাতে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫২ হাজার ৯০৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সংখ্যা জাতিসংঘও বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে, এবং নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় পূর্ণশক্তি নিয়ে অভিযান চালাতে যাচ্ছে ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

আপডেট সময় ১১:০০:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পূর্ণশক্তি নিয়ে গাজায় প্রবেশ করবে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তার দপ্তর এই তথ্য জানায়।

সোমবার রাতে আহত রিজার্ভ সেনাদের সঙ্গে এক বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, “শিগগিরই আমরা পূর্ণশক্তি নিয়ে অভিযানে নামব। এই অভিযান শেষ করা মানে হামাসকে পরাজিত করা, অর্থাৎ তাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করা।” তিনি আরও বলেন, “এই যুদ্ধে থামার কোনো পরিস্থিতি নেই। হয়তো মাঝেমধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হতে পারে, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যাব।”

গত ১৯ জানুয়ারি হামাসের সঙ্গে যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল, সেটির পর গাজায় আবার বড় আকারে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে। চলতি মাসের শুরুতেই ইসরায়েল সরকার গাজায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারি কর্মকর্তারা গাজায় দীর্ঘমেয়াদি সামরিক উপস্থিতির পরিকল্পনার কথাও প্রকাশ করেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, এই নতুন পরিকল্পিত অভিযান গাজার অধিকাংশ বাসিন্দাকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪ লাখ গাজাবাসীর মধ্যে প্রায় সবাই অন্তত একবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে। হামাসের ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার পর থেকেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, “স্বেচ্ছামূলক স্থানান্তর কর্মসূচি হবে আমাদের অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য।”

এদিকে, ইসরায়েলের কয়েকজন মন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি পুরোনো প্রস্তাব সামনে এনেছেন। সেখানে গাজার জনগণকে স্বেচ্ছায় জর্দান বা মিসরের মতো প্রতিবেশী দেশে চলে যাওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। তবে কায়রো, আম্মানসহ আরব বিশ্ব এবং ফিলিস্তিনিরা এই প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

সোমবারের বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা এমন একটি প্রশাসন গড়ে তুলেছি, যারা গাজাবাসীদের চলে যেতে সহায়তা করবে। কিন্তু আমাদের এমন দেশ দরকার, যারা তাদের গ্রহণ করতে রাজি থাকবে। আমরা এখন সেই দেশগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।” তার মতে, যদি বিকল্প দেওয়া হয়, তবে “৫০ শতাংশের বেশি ফিলিস্তিনি গাজা ছেড়ে যাবে।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় এক হাজার ২১৮ জন ইসরায়েলি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। হামাস ওই হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল, যাদের মধ্যে এখনো ৫৭ জন গাজায় রয়েছে এবং ৩৪ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।

এর প্রতিশোধে ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তাতে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫২ হাজার ৯০৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সংখ্যা জাতিসংঘও বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে গ্রহণ করেছে, এবং নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।