হেলথ টিপস
শীতকালে শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধে করণীয়
শীতকালে শিশুদের নিউমোনিয়া একটি সাধারণ কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। এই সময়ে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং ভাইরাসের সংক্রমণ শিশুদের শ্বাসতন্ত্রকে সহজেই আক্রান্ত করতে পারে। তবে সঠিক যত্ন ও সচেতনতা এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে। শীতকালে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে শীতকালে শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধে ৭টি করণীয় বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:
১. উষ্ণ পোশাক পরানো: শীতের সময় শিশুদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। শিশুদের এমন পোশাক পরান, যা সারা শরীর ঢেকে রাখে। ঠান্ডা বাতাস যেন তাদের শরীরে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য গলা, মাথা এবং পা বিশেষভাবে ঢেকে রাখুন। এমনকি ঘরের ভেতরও হালকা উষ্ণ পোশাক পরিয়ে রাখুন।
২. সুস্থ ও পুষ্টিকর খাবার: শীতকালে শিশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা, লেবু এবং আমলকী তাদের খাদ্যতালিকায় যোগ করুন। এছাড়া পর্যাপ্ত দুধ, ডিম, মাংস এবং শাকসবজি তাদের শরীরকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করবে। পানি কম খাওয়ার প্রবণতা থাকলে তাদের পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
৩. নিয়মিত হাত ধোয়া: শীতকালে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া হাতের মাধ্যমে ছড়ায়। শিশুদের খাওয়ার আগে, খেলাধুলার পর এবং বাইরে থেকে ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস শেখান। এতে তারা সহজেই জীবাণু সংক্রমণ এড়াতে পারবে।
৪. ভিড় এড়ানো: শিশুদের বড় জমায়েত বা ভিড়পূর্ণ জায়গায় নিয়ে গেলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বাস, বাজার, কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানে শিশুদের নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। যেকোনো ধরনের শীতজনিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকলে তাদের নিরাপদ দূরত্বে রাখুন।
৫. সময়মতো টিকা: নিউমোনিয়া প্রতিরোধে প্রিভেনার (পিএসভি) এবং হিব ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকর। শীতের আগেই এসব টিকা দেওয়া হলে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকগুণ বেড়ে যায়। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নির্ধারিত সময়ে টিকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
৬. শুষ্ক ও উষ্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করুন: শীতকালে শিশুর ঘর উষ্ণ ও শুষ্ক রাখা জরুরি। ঘরের ভেতরে ঠান্ডা বাতাস যেন প্রবেশ না করে, তা নিশ্চিত করতে দরজা-জানালা ভালোভাবে বন্ধ রাখুন। তবে ঘরে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখুন। হিটার ব্যবহার করলে খুব বেশি শুকনো পরিবেশ তৈরি হতে পারে, তাই মাঝেমধ্যে আর্দ্রতা বজায় রাখুন।
৭. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: শিশু যদি সর্দি-কাশিতে ভোগে এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা শিশুকে বড় ধরনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে। ঘরোয়া চিকিৎসায় সময় নষ্ট না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
এই সাতটি বিষয় মেনে চললে শীতকালে শিশুদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধ সহজ হবে। সঠিক যত্ন ও সতর্কতাই শিশুদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে সহায়ক।