ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতীয় আগরবাতি আমদানি ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন তৌকির, লড়েছেন শেষ পর্যন্ত উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত: হতাহতের খবর এখনও মেলেনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন: অভিবাসন বিষয়ক বৈঠক হবে বিশেষ গুরুত্বের সাথে ফার্মগেট স্টেশনে মেট্রোরেল আটকে যাওয়ার পর ফের চালু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় ইবি প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন, তদন্তে শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তির আশ্বাস ইকুয়েডরে ভয়াবহ সংঘর্ষ: পিকআপ ট্রাক ও এসইউভিতে নিহত ৯ ৪৮তম বিশেষ বিসিএস: ৫২০৬ জন উত্তীর্ণ ইসরায়েলি সেনার গুলিতে নিহত ৬৭ ফিলিস্তিনি: ত্রাণ নিতে আসার সময় ঘটে এ ঘটনা গাজীপুরে নাসির হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য গ্রেপ্তার

ডা. মাহবুব এর নেতৃত্বে দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারিতে বৈপ্লবিক অগ্রগতি, প্রশিক্ষণ নিলেন মালয়েশিয়ান বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
  • / 73

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে যুক্ত হয়েছে এক নতুন দিগন্ত। দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি, যা দেশের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এন্ডোস্কোপিক পদ্ধতিতে পরিচালিত এই সার্জারির ফলে শরীরে কোনো দৃশ্যমান দাগ থাকে না, যা রোগীদের জন্য যেমন স্বস্তিদায়ক, তেমনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্যও এটি একটি বড় অর্জন।

২০২২ সালে ডা. মাহবুব আলমের নেতৃত্বে দেশে শুরু হয় এন্ডোস্কোপিক থাইরয়েড সার্জারি। এই পদ্ধতিতে গলার বাইরে কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই ঠোঁটের নিচের অংশে একটি ছোট ছিদ্র করে টিউমার অপসারণ করা হয়। ফলে অপারেশনের পরেও রোগীর শরীরে কোনো দাগ দেখা যায় না। এ কারণেই দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই ‘দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি’।

ডা. মাহবুব আলমের কাছে এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রশিক্ষণ নিতে সম্প্রতি বাংলাদেশের এসেছেন মালয়েশিয়ার নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. বিন্সেন ট্যান। তিনি সরেজমিনে এই চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, “আমি বাংলাদেশে এসে অত্যন্ত মুগ্ধ। ডা. মাহবুব আলমের দক্ষতা এবং বাংলাদেশে এতো বড় পরিসরে দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি হওয়া সত্যিই অসাধারণ। অন্যান্য দেশে এ ধরনের চিকিৎসা সীমিত আকারে হলেও, এখানে তা ব্যাপকভাবে কার্যকরভাবে করা হচ্ছে।”

রোগীরাও এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিয়ে দারুণ সন্তুষ্ট। দাগবিহীন অপারেশনের কারণে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপনে খুব দ্রুত ফিরে যেতে পারছেন। ডা. মাহবুব আলম জানান, “বাংলাদেশে অনেক চিকিৎসক থাইরয়েড চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশে যান। কিন্তু আমাদের জন্য এটি অনেক গর্বের বিষয় যে বিদেশের চিকিৎসক এখন বাংলাদেশে এসেছেন এই চিকিৎসা শেখার জন্য।”

তিনি আরও বলেন, “থাইরয়েড টিউমার অপারেশনের জন্য আমরা গলার ভিতর কাটাছেঁড়া করি না। ঠোঁটের নিচে ছোট ছিদ্র করে এন্ডোস্কোপি পদ্ধতিতে সার্জারি সম্পন্ন করি, যার ফলে রোগীর শরীরে কোনো দৃশ্যমান দাগ থাকে না। এই পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা ইতোমধ্যে ১০০ জনেরও বেশি রোগীকে সফলভাবে চিকিৎসা দিয়েছি এবং তারা সবাই সুস্থ আছেন।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ কোটির বেশি মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত, যার মধ্যে প্রায় তিন কোটি মানুষ জানেন না যে তারা এই রোগে ভুগছেন। এই দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি তাদের জন্য হতে পারে একটি নতুন আশার আলো।

স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি প্রমাণ করে যে, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই। বরং এখন অন্যান্য দেশের চিকিৎসকরাও বাংলাদেশে এসে শিখছেন আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির নতুন দিগন্ত।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ডা. মাহবুব এর নেতৃত্বে দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারিতে বৈপ্লবিক অগ্রগতি, প্রশিক্ষণ নিলেন মালয়েশিয়ান বিশেষজ্ঞ ডাক্তার

আপডেট সময় ১১:০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

 

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে যুক্ত হয়েছে এক নতুন দিগন্ত। দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি, যা দেশের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এন্ডোস্কোপিক পদ্ধতিতে পরিচালিত এই সার্জারির ফলে শরীরে কোনো দৃশ্যমান দাগ থাকে না, যা রোগীদের জন্য যেমন স্বস্তিদায়ক, তেমনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্যও এটি একটি বড় অর্জন।

২০২২ সালে ডা. মাহবুব আলমের নেতৃত্বে দেশে শুরু হয় এন্ডোস্কোপিক থাইরয়েড সার্জারি। এই পদ্ধতিতে গলার বাইরে কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই ঠোঁটের নিচের অংশে একটি ছোট ছিদ্র করে টিউমার অপসারণ করা হয়। ফলে অপারেশনের পরেও রোগীর শরীরে কোনো দাগ দেখা যায় না। এ কারণেই দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই ‘দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি’।

ডা. মাহবুব আলমের কাছে এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রশিক্ষণ নিতে সম্প্রতি বাংলাদেশের এসেছেন মালয়েশিয়ার নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. বিন্সেন ট্যান। তিনি সরেজমিনে এই চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, “আমি বাংলাদেশে এসে অত্যন্ত মুগ্ধ। ডা. মাহবুব আলমের দক্ষতা এবং বাংলাদেশে এতো বড় পরিসরে দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি হওয়া সত্যিই অসাধারণ। অন্যান্য দেশে এ ধরনের চিকিৎসা সীমিত আকারে হলেও, এখানে তা ব্যাপকভাবে কার্যকরভাবে করা হচ্ছে।”

রোগীরাও এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিয়ে দারুণ সন্তুষ্ট। দাগবিহীন অপারেশনের কারণে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপনে খুব দ্রুত ফিরে যেতে পারছেন। ডা. মাহবুব আলম জানান, “বাংলাদেশে অনেক চিকিৎসক থাইরয়েড চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশে যান। কিন্তু আমাদের জন্য এটি অনেক গর্বের বিষয় যে বিদেশের চিকিৎসক এখন বাংলাদেশে এসেছেন এই চিকিৎসা শেখার জন্য।”

তিনি আরও বলেন, “থাইরয়েড টিউমার অপারেশনের জন্য আমরা গলার ভিতর কাটাছেঁড়া করি না। ঠোঁটের নিচে ছোট ছিদ্র করে এন্ডোস্কোপি পদ্ধতিতে সার্জারি সম্পন্ন করি, যার ফলে রোগীর শরীরে কোনো দৃশ্যমান দাগ থাকে না। এই পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা ইতোমধ্যে ১০০ জনেরও বেশি রোগীকে সফলভাবে চিকিৎসা দিয়েছি এবং তারা সবাই সুস্থ আছেন।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ কোটির বেশি মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় আক্রান্ত, যার মধ্যে প্রায় তিন কোটি মানুষ জানেন না যে তারা এই রোগে ভুগছেন। এই দাগবিহীন থাইরয়েড সার্জারি তাদের জন্য হতে পারে একটি নতুন আশার আলো।

স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি প্রমাণ করে যে, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই। বরং এখন অন্যান্য দেশের চিকিৎসকরাও বাংলাদেশে এসে শিখছেন আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির নতুন দিগন্ত।