১২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থাই–কাম্বোডিয়া সীমান্তে পুনরায় উত্তেজনা: অস্ত্রবিরতি ভেঙে বিমান হামলা, নিহত ১ সৈন্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দল জার্মান সেনাবাহিনী বাড়ছে: ২০৩৫ সালের মধ্যে ২,৬০,০০০ সক্রিয় সদস্যের লক্ষ্য অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের কঠিনতম পানি প্রকল্প সম্পন্ন করল ইরান ফিনল্যান্ডে ডাটা সেন্টারের নির্গত  তাপে গরম হচ্ছে পুরো শহর চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটারে সফলতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রকে এক নিমেষে প্রস্তরযুগে পাঠিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের F-35 যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ফিরে আসার বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল তুরস্ক: এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক।

হিমাগারে ভাড়া বাড়তি, ক্ষতির শঙ্কায় মাঠেই আলু সংরক্ষণ করছেন কৃষকরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:০৫:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / 119

ছবি সংগৃহীত

 

৫০ কেজির প্রতি বস্তা আলু সংরক্ষণে ৪০ থেকে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছেন কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা। তবে তাদের দাবি, সরকার নির্ধারিত ফিতে সংরক্ষণ করলে প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিপরীতে কৃষকরা বলছেন, বাড়তি খরচের চাপে অনেকেই বাধ্য হয়ে জমিতেই আলু সংরক্ষণ করছেন, যেখানে ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

মুন্সিগঞ্জ সদরের বাঘেশ্বর গ্রামের কৃষক জহিরুল হক জানান, সাড়ে চার বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৫০০ মণ আলু। প্রতি মণে উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৩৬ টাকা, অথচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। এতে মণপ্রতি লোকসান হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “বীজ, সেচ, কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া—সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু আলুর দাম পড়ে যাওয়ায় আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি। তাই জমিতেই আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছি।”

সরকার নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, ৫০ কেজির এক বস্তা আলু ৯ মাস হিমাগারে রাখার খরচ ধরা হয়েছে ২৮০ থেকে ৩৩৭ টাকা। তবে হিমাগারে তুলতে ও আনতে আলাদাভাবে যোগ হয় অতিরিক্ত ব্যয়।

একজন হিমাগার ব্যবস্থাপক পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, প্রকৃতপক্ষে ৫০ কেজির এক বস্তা আলু সংরক্ষণ করতে খরচ পড়ে মাত্র ২০০-২২০ টাকা। ফলে মালিকরা ৪০ থেকে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছেন।

তবে কোল্ডস্টোরেজ মালিকদের হিসাব বলছে, ব্যাংক ঋণ, জ্বালানি, শ্রমিক মজুরি ও অন্যান্য ব্যয়সহ ১৫ শতাংশ লাভ ধরে তাদের প্রতি কেজিতে খরচ হয় ৯.৬২ টাকা। সে অনুযায়ী, সরকার নির্ধারিত ৬.৭৫ টাকায় সংরক্ষণ করলে প্রতিকেজিতে বড় ধরনের লোকসান হয় বলে দাবি করছেন তারা।

কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক গোলাম সারওয়ার বলেন, “গত বছর ব্যাংক সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ, এ বছর বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া ৫-৬ মাস পর্যন্ত কোনো মুনাফা আসে না। ফলে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কৃষি মন্ত্রণালয় তা ৬.৭৫ টাকায় নির্ধারণ করেছে, যা আগের বছরের চেয়েও ২৫ পয়সা কম।”

এদিকে, বর্তমানে হিমাগারগুলো ৫০ কেজির বেশি আলু সংরক্ষণ করার অনুমতি দিচ্ছে না। ফলে অনেক কৃষকই হিমাগারে জায়গা না পেয়ে বা অতিরিক্ত ভাড়ার চাপে জমিতে আলু সংরক্ষণ করছেন। কৃষকদের দাবি, এমন সংকট থেকে উত্তরণে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।

নিউজটি শেয়ার করুন

হিমাগারে ভাড়া বাড়তি, ক্ষতির শঙ্কায় মাঠেই আলু সংরক্ষণ করছেন কৃষকরা

আপডেট সময় ১১:০৫:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

 

৫০ কেজির প্রতি বস্তা আলু সংরক্ষণে ৪০ থেকে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছেন কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা। তবে তাদের দাবি, সরকার নির্ধারিত ফিতে সংরক্ষণ করলে প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিপরীতে কৃষকরা বলছেন, বাড়তি খরচের চাপে অনেকেই বাধ্য হয়ে জমিতেই আলু সংরক্ষণ করছেন, যেখানে ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

মুন্সিগঞ্জ সদরের বাঘেশ্বর গ্রামের কৃষক জহিরুল হক জানান, সাড়ে চার বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৫০০ মণ আলু। প্রতি মণে উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৩৬ টাকা, অথচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। এতে মণপ্রতি লোকসান হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “বীজ, সেচ, কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া—সবকিছুর দাম বেড়েছে। কিন্তু আলুর দাম পড়ে যাওয়ায় আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি। তাই জমিতেই আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছি।”

সরকার নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, ৫০ কেজির এক বস্তা আলু ৯ মাস হিমাগারে রাখার খরচ ধরা হয়েছে ২৮০ থেকে ৩৩৭ টাকা। তবে হিমাগারে তুলতে ও আনতে আলাদাভাবে যোগ হয় অতিরিক্ত ব্যয়।

একজন হিমাগার ব্যবস্থাপক পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, প্রকৃতপক্ষে ৫০ কেজির এক বস্তা আলু সংরক্ষণ করতে খরচ পড়ে মাত্র ২০০-২২০ টাকা। ফলে মালিকরা ৪০ থেকে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছেন।

তবে কোল্ডস্টোরেজ মালিকদের হিসাব বলছে, ব্যাংক ঋণ, জ্বালানি, শ্রমিক মজুরি ও অন্যান্য ব্যয়সহ ১৫ শতাংশ লাভ ধরে তাদের প্রতি কেজিতে খরচ হয় ৯.৬২ টাকা। সে অনুযায়ী, সরকার নির্ধারিত ৬.৭৫ টাকায় সংরক্ষণ করলে প্রতিকেজিতে বড় ধরনের লোকসান হয় বলে দাবি করছেন তারা।

কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক গোলাম সারওয়ার বলেন, “গত বছর ব্যাংক সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ, এ বছর বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া ৫-৬ মাস পর্যন্ত কোনো মুনাফা আসে না। ফলে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কৃষি মন্ত্রণালয় তা ৬.৭৫ টাকায় নির্ধারণ করেছে, যা আগের বছরের চেয়েও ২৫ পয়সা কম।”

এদিকে, বর্তমানে হিমাগারগুলো ৫০ কেজির বেশি আলু সংরক্ষণ করার অনুমতি দিচ্ছে না। ফলে অনেক কৃষকই হিমাগারে জায়গা না পেয়ে বা অতিরিক্ত ভাড়ার চাপে জমিতে আলু সংরক্ষণ করছেন। কৃষকদের দাবি, এমন সংকট থেকে উত্তরণে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।