ডিএনসিসির সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফ্রি ডেঙ্গু টেস্টের সুবিধা চালু হয়েছে: ডিএনসিসি প্রশাসক

- আপডেট সময় ০৬:৫১:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
- / 24
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ডেঙ্গু ইউনিট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি জানান, ডিএনসিসির সকল নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মাতৃসদনে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) গুলশান-২ নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে সম্ভাব্য ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে মশার বিস্তার রোধ ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভায় ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিকের প্রতিনিধি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, এবার আগেভাগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, যা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করছে। সবাইকে একসাথে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে। বাসা-বাড়িতেই এডিস মশার লার্ভা জন্মায়, অথচ আমাদের কর্মীরা নিরাপত্তার কারণে সেগুলোতে প্রবেশ করতে পারে না। তাই নাগরিকদের নিজ উদ্যোগে বাসা-বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি। আগামী সপ্তাহ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন শুরু হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে বলেও জানান তিনি।
মশক নিধনে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব দক্ষ টিম গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উচ্চ পর্যায়ে পরিবর্তন এলেও মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের অবস্থান একই থাকে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কাজ করাতে গিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। তাই বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে মশক নিধনে যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি।’
তিনি জানান, ‘মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের বিলের নামে ১৭-১৮ হাজার টাকা দিলেও তারা পায় মাত্র ৬-৮ হাজার টাকা। এই ব্যবধান দূর করতে কর্মীদের বিল সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আউটসোর্সিং কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র কর্মীদের তালিকা, মোবাইল নম্বর ও একাউন্ট নম্বর সরবরাহ করবে।’
এছাড়া এলাকাভিত্তিক মশা নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে কর্মীদের মোবাইল নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। যদি কোন অনিয়ম হয়, সিটি করপোরেশন ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু রোগী ও তাদের স্বজনদের কাউন্সিলিং জরুরি। প্রতিটি হাসপাতালে একটি রেডি কাউন্সিলিং টিম থাকা উচিত। একইসঙ্গে ডেঙ্গু পরীক্ষাকে সহজ করতে হবে এবং বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু এখন আর শুধু শহরে সীমাবদ্ধ নয়, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া যায়, তাই রিহ্যাবসহ সকলকে দায়িত্ব নিতে হবে।
অন্যদিকে, কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, ডেঙ্গুতে দেশে যে হারে মৃত্যু হয় তা অস্বাভাবিক। প্রতিটি হাসপাতালে কার্যকরী গাইডলাইন অনুসরণ করে রোগীদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে এবং মশারির ভিতরে রেখে চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।
সভায় ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।