ইউরেনিয়াম মজুদের বিষয়ে কোনো ছাড় নয়, যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সতর্কবার্তা

- আপডেট সময় ১২:২৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
- / 26
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিধর দেশ ইরান জানিয়ে দিয়েছে, তারা কখনোই তাদের ইউরেনিয়ামের মজুদ নিঃশেষ করবে না এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তিতে এ বিষয়ে কোনো ছাড়ও দেবে না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইরানের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যিনি গতকাল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ বিষয়ে বক্তব্য দেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নির্দেশ অনুযায়ী যেসব বিষয় ‘রেড লাইন’ হিসেবে নির্ধারিত, সেগুলোতে কোনোভাবেই আপস হবে না। এসবের মধ্যে রয়েছে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা, সেন্ট্রিফিউজ ভেঙে ফেলা অথবা পূর্ববর্তী মজুদের পরিমাণ কমিয়ে আনা। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এসব বিষয়ের কোনোটি নিয়েই আলোচনা নয়, বরং তা ইরানের সার্বভৌম অধিকার।
ইরানের এই কর্মকর্তা আরও জানান, দেশটি তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়েও কোনো আন্তর্জাতিক আলোচনায় অংশ নেবে না। ইরানের মতে, এটি তাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষমতার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সম্প্রতি ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এক গোপন বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ইরান ধারণা পায়, যুক্তরাষ্ট্র চায় না ইরান সম্পূর্ণভাবে পারমাণবিক কার্যক্রম বন্ধ করুক। এই ইঙ্গিতকে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার একটি সম্ভাব্য ভিত্তি হিসেবে দেখছে তেহরান।
এদিকে, ইরানের পক্ষ থেকে শুক্রবার জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই চুক্তির ব্যাপারে আন্তরিক হয় এবং অযৌক্তিক শর্ত আরোপ না করে, তাহলে দুই দেশের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য চুক্তি হতে পারে। তবে এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বাসযোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ করেই ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান। এবার তেহরান চায়, এমন ঘটনা পুনরায় না ঘটে তার লিখিত নিশ্চয়তা। এ নিয়ে তেহরান সম্প্রতি ওয়াশিংটনকে জানিয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ হলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে কিছুটা ছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে পারে তারা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকোফ গত মঙ্গলবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ইরান যদি চুক্তি চায়, তবে তাদের অবশ্যই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে এবং মজুদ নিঃশেষ করতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে উভয় পক্ষই এখনো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নতুন কোনো সমঝোতার পথ তৈরি করতে পারে।