ঢাকা ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ঈদের দ্বিতীয় দিন চলবে অধিকাংশ আন্তঃনগর ট্রেন, যুক্ত হচ্ছে অতিরিক্ত কোচ লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য বৈঠক সোমবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে হামলায় বিএনপি নেতার মৃত্যু ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়াল ইউরোপের দুই প্রভাবশালী দেশ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত ঢাকা থেকে বিদায় নিয়েছে ভুটান দল, রাতে আসছে সিঙ্গাপুরের ৪২ সদস্য বরগুনায় কোরবানির দিনে পশু কাটতে গিয়ে আহত ২০ জন ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সম্পন্ন : মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করলো বিএনপি ঈদের দিনেও গাজায় রক্তক্ষরণ: ইসরায়েলি হামলায় ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত

মেটার বিরুদ্ধে একাধিপত্যের অভিযোগে এফটিসির মামলা, আদালতে জবাব দিলেন জাকারবার্গ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:৪২:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / 18

ছবি সংগৃহীত

 

বিশ্বের অন্যতম বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠান মেটার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) আদালতে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়া খাতে একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করে প্রতিযোগিতা নষ্ট করছে মেটা, এতে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা হুমকিতে পড়েছে।

মামলার শুনানির শুরুতে মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ আদালতে হাজির হয়ে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, এক সময় নিজেই ইনস্টাগ্রামকে আলাদা করে দেওয়ার চিন্তা করেছিলেন। ২০১৮ সালের একটি ইমেইলে তিনি লিখেছিলেন, ‘আগামী ৫–১০ বছরের মধ্যে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে আলাদা করা লাগতে পারে।’

এফটিসির অভিযোগ, মেটা প্রতিযোগীদের কিনে নিয়ে বাজারে একাধিপত্য বজায় রেখেছে। ২০১২ সালে ইনস্টাগ্রাম ও ২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণের মাধ্যমে তারা প্রতিযোগিতাকে দমন করেছে। এছাড়া, অন্যান্য অ্যাপের এপিআই সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া এবং প্রতিযোগীদের ফিচার কপি করেও মেটা অন্যদের পেছনে ঠেলে দিয়েছে।

জাকারবার্গ আদালতে প্রায় ১০ ঘণ্টা জবানবন্দি দেন। সেখানে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এখন দ্রুত পরিবর্তনশীল, এবং মেটাকে টিকে থাকতে প্রতিনিয়ত লড়তে হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, তরুণ ব্যবহারকারীরা এখন টিকটক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে বেশি সময় দিচ্ছেন।

এফটিসির আইনজীবীরা আদালতে একাধিক ইমেইল ও নথি উপস্থাপন করেন, যেখানে জাকারবার্গ নিজেই স্বীকার করেছিলেন ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, ২০১১ সালেই তিনি বুঝেছিলেন ইনস্টাগ্রাম ফটো শেয়ারিংয়ে ফেসবুককে পেছনে ফেলছে। সেই কারণেই ২০১২ সালে ১ বিলিয়ন ডলারে ইনস্টাগ্রামকে কিনে নেয় ফেসবুক।

হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে ফেসবুকের উদ্বেগ ছিল যে, গুগল এটি অধিগ্রহণ করতে পারে। সেই আশঙ্কায় ২০১৪ সালে মেটা ১৯ বিলিয়ন ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণ করে।

জাকারবার্গ দাবি করেন, এই দুই প্ল্যাটফর্ম অধিগ্রহণের মাধ্যমে মেটা সেগুলোকে আরও উন্নত করেছে এবং ব্যবহারকারীদের উপকারেই এসেছে এই সিদ্ধান্ত।

এছাড়া আদালতে তিনি বলেন, ফেসবুকের মূল উদ্দেশ্য ছিল বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা। কিন্তু এখন নতুন বন্ধু যুক্ত করার হার এবং কনটেন্ট শেয়ার করার পরিমাণ অনেক কমে গেছে। এখন ব্যবহারকারীরা মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে বেশি সময় কাটাচ্ছেন।

এফটিসির এক নথি অনুযায়ী, ২০২২ সালে ফেসবুকে নতুন বন্ধু হওয়া এবং বন্ধুদের সঙ্গে কনটেন্ট শেয়ার করার প্রবণতা কমে গেছে।

মার্ক জাকারবার্গ বলেন, “আগে মানুষ যা বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করত, এখন সেটাও কমছে। ভবিষ্যতে ফিড নয়, বরং ব্যক্তিগত মেসেজিং বেশি জনপ্রিয় হবে।”

এছাড়া, ইউটিউবকেও বড় প্রতিযোগী হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তরুণদের মধ্যে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি এবং অনেকে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের চেয়ে সেখানে বেশি সময় কাটায়।

যদিও সোশ্যাল মিডিয়া জগতে মেটার অবস্থান এখনও শক্ত, তবে এই মামলায় পরাজিত হলে প্রতিষ্ঠানটিকে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ আলাদা করে দিতে হতে পারে, যা মেটার জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

মেটার বিরুদ্ধে একাধিপত্যের অভিযোগে এফটিসির মামলা, আদালতে জবাব দিলেন জাকারবার্গ

আপডেট সময় ০২:৪২:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

 

বিশ্বের অন্যতম বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠান মেটার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) আদালতে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়া খাতে একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করে প্রতিযোগিতা নষ্ট করছে মেটা, এতে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা হুমকিতে পড়েছে।

মামলার শুনানির শুরুতে মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ আদালতে হাজির হয়ে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, এক সময় নিজেই ইনস্টাগ্রামকে আলাদা করে দেওয়ার চিন্তা করেছিলেন। ২০১৮ সালের একটি ইমেইলে তিনি লিখেছিলেন, ‘আগামী ৫–১০ বছরের মধ্যে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে আলাদা করা লাগতে পারে।’

এফটিসির অভিযোগ, মেটা প্রতিযোগীদের কিনে নিয়ে বাজারে একাধিপত্য বজায় রেখেছে। ২০১২ সালে ইনস্টাগ্রাম ও ২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণের মাধ্যমে তারা প্রতিযোগিতাকে দমন করেছে। এছাড়া, অন্যান্য অ্যাপের এপিআই সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া এবং প্রতিযোগীদের ফিচার কপি করেও মেটা অন্যদের পেছনে ঠেলে দিয়েছে।

জাকারবার্গ আদালতে প্রায় ১০ ঘণ্টা জবানবন্দি দেন। সেখানে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এখন দ্রুত পরিবর্তনশীল, এবং মেটাকে টিকে থাকতে প্রতিনিয়ত লড়তে হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, তরুণ ব্যবহারকারীরা এখন টিকটক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে বেশি সময় দিচ্ছেন।

এফটিসির আইনজীবীরা আদালতে একাধিক ইমেইল ও নথি উপস্থাপন করেন, যেখানে জাকারবার্গ নিজেই স্বীকার করেছিলেন ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, ২০১১ সালেই তিনি বুঝেছিলেন ইনস্টাগ্রাম ফটো শেয়ারিংয়ে ফেসবুককে পেছনে ফেলছে। সেই কারণেই ২০১২ সালে ১ বিলিয়ন ডলারে ইনস্টাগ্রামকে কিনে নেয় ফেসবুক।

হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে ফেসবুকের উদ্বেগ ছিল যে, গুগল এটি অধিগ্রহণ করতে পারে। সেই আশঙ্কায় ২০১৪ সালে মেটা ১৯ বিলিয়ন ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণ করে।

জাকারবার্গ দাবি করেন, এই দুই প্ল্যাটফর্ম অধিগ্রহণের মাধ্যমে মেটা সেগুলোকে আরও উন্নত করেছে এবং ব্যবহারকারীদের উপকারেই এসেছে এই সিদ্ধান্ত।

এছাড়া আদালতে তিনি বলেন, ফেসবুকের মূল উদ্দেশ্য ছিল বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা। কিন্তু এখন নতুন বন্ধু যুক্ত করার হার এবং কনটেন্ট শেয়ার করার পরিমাণ অনেক কমে গেছে। এখন ব্যবহারকারীরা মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে বেশি সময় কাটাচ্ছেন।

এফটিসির এক নথি অনুযায়ী, ২০২২ সালে ফেসবুকে নতুন বন্ধু হওয়া এবং বন্ধুদের সঙ্গে কনটেন্ট শেয়ার করার প্রবণতা কমে গেছে।

মার্ক জাকারবার্গ বলেন, “আগে মানুষ যা বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করত, এখন সেটাও কমছে। ভবিষ্যতে ফিড নয়, বরং ব্যক্তিগত মেসেজিং বেশি জনপ্রিয় হবে।”

এছাড়া, ইউটিউবকেও বড় প্রতিযোগী হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তরুণদের মধ্যে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি এবং অনেকে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের চেয়ে সেখানে বেশি সময় কাটায়।

যদিও সোশ্যাল মিডিয়া জগতে মেটার অবস্থান এখনও শক্ত, তবে এই মামলায় পরাজিত হলে প্রতিষ্ঠানটিকে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ আলাদা করে দিতে হতে পারে, যা মেটার জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।