যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা চীনের

- আপডেট সময় ০১:৫৫:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫১৩ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধ দিন দিন আরও জটিল রূপ নিচ্ছে। সর্বশেষ উত্তেজনার ঢেউ উঠেছে চীনের নতুন সিদ্ধান্তকে ঘিরে দেশটি দুর্লভ খনিজ ও প্রাকৃতিক চুম্বকজাত পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এ সিদ্ধান্তে বৈশ্বিক শিল্পক্ষেত্রে দোলাচলের আশঙ্কা বাড়ছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বর্তমানে সামারিয়াম, টারবিয়াম, ডিসপ্রোসিয়াম, লিউটেনিয়াম, স্ক্যানডিয়াম ও ইট্রিয়ামের মতো অন্তত ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ বিরল মৌল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এসব মৌল যুক্তরাষ্ট্রের বিমান, মহাকাশ, গাড়ি, ড্রোন ও সামরিক যন্ত্রাংশ তৈরিতে অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমানে চীনের বিভিন্ন বন্দরে হাজারো টন মৌল আটকে আছে, যার ফলে আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ি, রোবট, মিসাইল, ড্রোন এবং সেমিকন্ডাক্টর চিপ নির্মাণে ব্যাপক বাধার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এসব প্রযুক্তি চুম্বক ও বিরল মৌল নির্ভর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি শিল্পের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিটিক্যাল মিনেরালস অ্যাডভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান ড্যানিয়েল প্ল্যাকার্ডের মতে, এই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা এবং প্রযুক্তি উৎপাদন খাতে গভীর সংকট সৃষ্টি করতে পারে। তিনি জানান, ড্রোন ও রোবটিকস আগামী দিনের যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং এসব উৎপাদনে ব্যবহৃত মৌলের সরবরাহ বিঘ্নিত হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক হবে।
এই অবস্থায় বিকল্প উৎস খোঁজার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ক্যালিফোর্নিয়ার মরুভূমিতে কিছু বিরল মৌলের খনন প্রকল্প শুরু করার কথা জানানো হয়েছে। যদিও চীন বিশ্বে বিরল মৌলের প্রায় ৯০ শতাংশ উৎপাদন করে থাকে, ফলে দ্রুত বিকল্প উৎস স্থাপন খুব সহজ হবে না।
উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক আরোপের পরপরই এই উত্তেজনা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করলে, চীন পাল্টা জবাবে ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে দেয় এবং বিরল মৌলের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটে।
বিশ্লেষকদের মতে, আধুনিক প্রযুক্তির দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র যতোই অগ্রগামী হোক, চীনের এই কৌশল বিশ্বশক্তির ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।