ঢাকা ১১:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ইসরায়েলের হামলা ও অবরোধে গাজায় একদিনেই ৭১ জনের প্রাণহানি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হেফাজতের বৈঠক: নীতিগত আলোচনা আবহাওয়ার সতর্কতা: ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস আওয়ামী লীগের আমলে ব্যাংকের ৮০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়ে গেছে অর্থ উপদেষ্টা রেলপথ গুলোকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চায় সরকার আরো ১৪ রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামি ধরতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ওপর হামলা, এসআই গুরুতর আহত নোয়াখালীতে ৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ ২ মাদক কারবারি আটক নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় নিশ্চিত করতেই চার্জশীট দিতে দেরী হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারত নদীর পাড়ে,জঙ্গলে মানুষ ফেলে যাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দিনাজপুরে লিচুর ফুলে মধু উৎপাদনে বিপ্লব, আয় ১২০ কোটি টাকার বেশি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:২৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / 39

ছবি সংগৃহীত

 

দিনাজপুরের লিচু খ্যাতি পুরোনো, এবার সেই লিচুর ফুল থেকেই মধু সংগ্রহে ঘটেছে নীরব বিপ্লব। মৌসুমের শেষে ফিরে যাওয়া মৌচাষিরা জানাচ্ছেন, এবার রেকর্ড পরিমাণ মধু সংগ্রহ হয়েছে।

সরকারি পরিসংখ্যান ও মৌচাষি সংগঠনগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৌচাষির সংখ্যা, মৌবক্স স্থাপন এবং উৎপাদিত মধুর পরিমাণে বিরাট পার্থক্য থাকলেও উভয় পক্ষই একমত দিনাজপুরে মধু উৎপাদন এখন নতুন দিগন্ত খুলেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে দিনাজপুরে প্রায় ১২ হাজার মৌবক্স স্থাপন করেছেন ৩৩৫ জন মৌচাষি। এদের মাধ্যমে উৎপাদিত মধুর পরিমাণ প্রায় ৬৭ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১ কোটি টাকার ওপরে।

অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ হানি কমিউনিটির দাবি একেবারেই ভিন্ন। সংগঠনটির পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাষ্য, ‘এ বছর দেড় হাজারেরও বেশি মৌচাষি সোয়া লাখ মৌবক্স স্থাপন করেছেন। প্রতিজন গড়ে ৩ টন করে মধু সংগ্রহ করেছেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা।’

মৌচাষিদের অভিজ্ঞতাও তাদের দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। বাগেরহাট থেকে আসা মৌচাষি আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র ১৪ দিনে ১০০টি মৌবক্স থেকে ১ টন মধু পেয়েছি। খরচ বাদ দিয়ে আয় হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা।’

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. আনিছুজ্জামান বলেন, ‘মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে লিচুর উৎপাদন ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। এ কারণে লিচু চাষিরাও মৌচাষিদের স্বাগত জানাচ্ছেন।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনাজপুরে লিচুর ফুল থেকে উৎপাদিত মধু ঘন হয় না এবং মানে অনন্য। এর বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে দেশের বাজারে।

এমবিএফের মালিক ও হানি কমিউনিটির সদস্য মোসাদ্দেক হোসেন জানান, ‘চলতি মৌসুমে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদিত হতে পারে। দিনাজপুর এখন মধু উৎপাদনের হটস্পট।’

সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়ে মৌচাষে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা বাড়ালে এ শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মধুর শহর হিসেবে দিনাজপুরের পরিচিতি এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

দিনাজপুরে লিচুর ফুলে মধু উৎপাদনে বিপ্লব, আয় ১২০ কোটি টাকার বেশি

আপডেট সময় ১০:২৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

 

দিনাজপুরের লিচু খ্যাতি পুরোনো, এবার সেই লিচুর ফুল থেকেই মধু সংগ্রহে ঘটেছে নীরব বিপ্লব। মৌসুমের শেষে ফিরে যাওয়া মৌচাষিরা জানাচ্ছেন, এবার রেকর্ড পরিমাণ মধু সংগ্রহ হয়েছে।

সরকারি পরিসংখ্যান ও মৌচাষি সংগঠনগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৌচাষির সংখ্যা, মৌবক্স স্থাপন এবং উৎপাদিত মধুর পরিমাণে বিরাট পার্থক্য থাকলেও উভয় পক্ষই একমত দিনাজপুরে মধু উৎপাদন এখন নতুন দিগন্ত খুলেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে দিনাজপুরে প্রায় ১২ হাজার মৌবক্স স্থাপন করেছেন ৩৩৫ জন মৌচাষি। এদের মাধ্যমে উৎপাদিত মধুর পরিমাণ প্রায় ৬৭ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১ কোটি টাকার ওপরে।

অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ হানি কমিউনিটির দাবি একেবারেই ভিন্ন। সংগঠনটির পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাষ্য, ‘এ বছর দেড় হাজারেরও বেশি মৌচাষি সোয়া লাখ মৌবক্স স্থাপন করেছেন। প্রতিজন গড়ে ৩ টন করে মধু সংগ্রহ করেছেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা।’

মৌচাষিদের অভিজ্ঞতাও তাদের দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। বাগেরহাট থেকে আসা মৌচাষি আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাত্র ১৪ দিনে ১০০টি মৌবক্স থেকে ১ টন মধু পেয়েছি। খরচ বাদ দিয়ে আয় হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা।’

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. আনিছুজ্জামান বলেন, ‘মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে লিচুর উৎপাদন ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। এ কারণে লিচু চাষিরাও মৌচাষিদের স্বাগত জানাচ্ছেন।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনাজপুরে লিচুর ফুল থেকে উৎপাদিত মধু ঘন হয় না এবং মানে অনন্য। এর বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে দেশের বাজারে।

এমবিএফের মালিক ও হানি কমিউনিটির সদস্য মোসাদ্দেক হোসেন জানান, ‘চলতি মৌসুমে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদিত হতে পারে। দিনাজপুর এখন মধু উৎপাদনের হটস্পট।’

সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়ে মৌচাষে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা বাড়ালে এ শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মধুর শহর হিসেবে দিনাজপুরের পরিচিতি এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।