শুল্ক যুদ্ধে উত্তাল বিশ্ববাজার: মূল্যস্ফীতি অস্বীকার ট্রাম্পের, হুমকি চীনের উদ্দেশে

- আপডেট সময় ১১:৫১:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
- / 18
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তেল ও খাদ্যের দাম কমছে, সুদের হারও হ্রাস পেয়েছে এবং শুল্ক আরোপের পরেও মূল্যস্ফীতির কোনো লক্ষণ নেই। সোমবার (৭ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ও ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, “তেলের দাম কমেছে, খাদ্যের দাম কমেছে, সুদের হারও নিম্নমুখী। মূল্যস্ফীতি শূন্যের কোঠায়। যারা এতদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে শোষণ করত, তাদের কাছ থেকে এখন আমরা শুল্কের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলার আয় করছি।”
রয়টার্স জানায়, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম প্রায় তিন শতাংশ কমেছে যা ২০২১ সালের পর সর্বনিম্ন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দরপতনের পেছনে মূলত ট্রাম্পের শুল্কনীতি ঘিরে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা কাজ করছে। কাঁচামালের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় ধাতব পদার্থ ও কফির মতো পণ্যের দামও নিচের দিকে নামছে।
ট্রাম্পের ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ ঘোষণা বিশ্ববাজারে বড়সড় প্রভাব ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারেও ধস নেমেছে। নাইকি, অ্যাপল ও টার্গেটের মতো বড় মার্কিন কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্যে বড় পতন দেখা গেছে।
পোস্টে ট্রাম্প চীনকে “সবচেয়ে বড় শোষক” আখ্যা দেন। তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে চীন পাল্টা ব্যবস্থা না নিয়ে বরং অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে—যা আগের উচ্চ শুল্কের ওপর আরোপিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে যদি চীন এই অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে পরদিন আমি আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বসাব।”
এক্সিওসের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রথমে চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক বসান। পরে আরও ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫৪ শতাংশে। যদি নতুন হুমকি বাস্তবায়িত হয়, তবে চীনা পণ্যের উপর মোট শুল্কের হার ১০৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।
ট্রাম্প বলেন, “যারা আমাদের ঠকিয়েছে, তারা এখন দাম দিচ্ছে। আগের প্রশাসনের নতজানু নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের এত ক্ষতি হয়েছে। এখন সময় এসেছে সমান শর্তে বাণিজ্যের।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।