রূপগঞ্জে শ্রমিক বিক্ষোভে রণক্ষেত্র, আহত অন্তত ৫০

- আপডেট সময় ০৬:১৬:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫০৭ বার পড়া হয়েছে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত রবিনটেক্স গার্মেন্টসে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের জেরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে কর্মীরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এতে নারীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যও রয়েছেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে রবিনটেক্স কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা টানা কয়েকদিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। দাবি ছিল, ঈদের আগে যেভাবে ৫০ শ্রমিককে বিনা নোটিশে ছাঁটাই করা হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
বিক্ষোভরত শ্রমিক রাহেলা বেগম বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসেছিলাম, হঠাৎই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে আমাদের সরিয়ে দিতে চায়। আমরা প্রতিবাদ করলে তারা লাঠিচার্জ শুরু করে। আমাদের অনেক নারী সহকর্মী আহত হন।”
শ্রমিকরা জানায়, বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে তাদের দিকে লাঠিচার্জ করা হয়। উত্তেজিত শ্রমিকরা তখন কারখানা থেকে বের হয়ে মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে অবরোধ গড়ে তোলেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী অবরোধ সরাতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মুবিন, সৈনিক বাঁধন, সোহরাব ও মেহেদী। শ্রমিকদের মধ্যে আহত হয়েছেন শাফিয়া, রুনা, মলিনা, মাজেদা, রুপু প্রমুখ। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, “শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের কয়েকজন সদস্য আহত হন।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয় সকালে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় প্রায় ঘণ্টাখানেক। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো মন্তব্য না করলেও শ্রমিকদের দাবি, তারা ঈদের আগে ন্যায্য অধিকার নিয়ে আবারো আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন যদি সমাধানের কোনো পথ খোঁজা না হয়।
শ্রমিকদের ক্ষোভ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নয়, বরং মালিকপক্ষের হঠাৎ ছাঁটাই সিদ্ধান্তই এ উত্তপ্ত পরিস্থিতির মূল কারণ।