ঢাকা ০৪:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১৪৫৪ জন গ্রেপ্তার সব শ্রেণির মানুষের রক্ত-ঘামে জুলাই বিপ্লবের সাফল্য: আসিফ মাহমুদ ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে বিপর্যস্ত মার্কিন অর্থনীতি, ছাঁটাই-ব্যয় সংকটে ব্যবসা খাত গাজীপুরে পুকুরে ডুবে দুই কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু টেকনাফে পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল অস্ত্র-গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধার কিংবদন্তি প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ খাগড়াছড়ির পাহাড়ে বিদেশি জাতের আমের বাণিজ্যিক চাষ, সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত আমরা চাই সকল শহীদ পরিবারের চোখের জল মুছে দিতে: মা ও শিশু উপদেষ্টা মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা ৩ জনের কেউ জঙ্গি নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পবিত্র আশুরায় রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল, শোকে আচ্ছন্ন পুরান ঢাকা

ভারত-বাংলাদেশের পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ধস

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
  • / 11

ছবি সংগৃহীত

 

বৈশ্বিক মন্দা এবং গত ৫ আগস্টের পর ভারত-বাংলাদেশের পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বড় ধস নেমেছে। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে বেনাপোল স্থলবন্দরে, যেখানে বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি এবং সংকট তৈরি হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আগের বছরের তুলনায় ৭ লাখ ৬ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন বাণিজ্য কম হয়েছে। এর মধ্যে আমদানি কমেছে ৬ লাখ ৩১ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন এবং রফতানি কমেছে ৭৫ হাজার ২৩২ মেট্রিক টন।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, নানা নিষেধাজ্ঞার কারণে বাণিজ্যের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা। তারা দুই দেশের বিধি-নিষেধের অচলাবস্থা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন।

বাণিজ্যিক মহলের তথ্য অনুযায়ী, ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় গত ৮ এপ্রিল থেকে ভারতের আকাশপথ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি বন্ধ রয়েছে। পরবর্তীতে ১৭ মে আরেকটি নিষেধাজ্ঞায় তৈরি পোশাক, তুলা সুতির বর্জ্য, প্লাস্টিক কাটের আসবাবপত্র ও ফলজাতীয় পণ্য রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর ২৬ জুন পাট ও পাটজাত পণ্য স্থলপথে রফতানিও বন্ধ করে ভারত। অন্যদিকে দেশীয় শিল্প রক্ষার কারণে বাংলাদেশ সরকার স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে ২১ লাখ ৩০ হাজার ২২৮ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৮ মেট্রিক টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ৬ লাখ ৩১ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন কম।

রফতানির দিক থেকেও চিত্র একই। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ভারত রফতানি হয়েছিল ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭২ মেট্রিক টন পণ্য, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কমে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৮১ হাজার ৪৪০ মেট্রিক টনে।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, “নিষেধাজ্ঞার কারণে বাণিজ্য কার্যত অচল হয়ে গেছে।” একই মন্তব্য করেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের দফতর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞা এবং ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাণিজ্য প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, “সবশেষ গত বৃহস্পতিবার ৪৮৬ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে, আর রফতানি হয়েছে মাত্র ৭৬ ট্রাক।”

বাণিজ্য সচল রাখতে উভয় দেশের সরকারের সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ভারত-বাংলাদেশের পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ধস

আপডেট সময় ১০:০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

 

বৈশ্বিক মন্দা এবং গত ৫ আগস্টের পর ভারত-বাংলাদেশের পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বড় ধস নেমেছে। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে বেনাপোল স্থলবন্দরে, যেখানে বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি এবং সংকট তৈরি হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আগের বছরের তুলনায় ৭ লাখ ৬ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন বাণিজ্য কম হয়েছে। এর মধ্যে আমদানি কমেছে ৬ লাখ ৩১ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন এবং রফতানি কমেছে ৭৫ হাজার ২৩২ মেট্রিক টন।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, নানা নিষেধাজ্ঞার কারণে বাণিজ্যের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা। তারা দুই দেশের বিধি-নিষেধের অচলাবস্থা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন।

বাণিজ্যিক মহলের তথ্য অনুযায়ী, ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় গত ৮ এপ্রিল থেকে ভারতের আকাশপথ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি বন্ধ রয়েছে। পরবর্তীতে ১৭ মে আরেকটি নিষেধাজ্ঞায় তৈরি পোশাক, তুলা সুতির বর্জ্য, প্লাস্টিক কাটের আসবাবপত্র ও ফলজাতীয় পণ্য রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর ২৬ জুন পাট ও পাটজাত পণ্য স্থলপথে রফতানিও বন্ধ করে ভারত। অন্যদিকে দেশীয় শিল্প রক্ষার কারণে বাংলাদেশ সরকার স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে ২১ লাখ ৩০ হাজার ২২৮ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৮ মেট্রিক টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ৬ লাখ ৩১ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন কম।

রফতানির দিক থেকেও চিত্র একই। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ভারত রফতানি হয়েছিল ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭২ মেট্রিক টন পণ্য, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কমে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৮১ হাজার ৪৪০ মেট্রিক টনে।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, “নিষেধাজ্ঞার কারণে বাণিজ্য কার্যত অচল হয়ে গেছে।” একই মন্তব্য করেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের দফতর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞা এবং ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাণিজ্য প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, “সবশেষ গত বৃহস্পতিবার ৪৮৬ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে, আর রফতানি হয়েছে মাত্র ৭৬ ট্রাক।”

বাণিজ্য সচল রাখতে উভয় দেশের সরকারের সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।