বাংলাদেশ থেকে ১২ হাজার দক্ষ জনবল নিতে নর্থ মেসিডোনিয়ার আগ্রহ প্রকাশ
- আপডেট সময় ০১:১৬:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
- / 45
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ নর্থ মেসিডোনিয়া বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি নতুন শ্রমবাজার হিসেবে দ্বার খুলতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ১২ হাজার দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটি। আগামী ১৯ মে রাজধানী স্কোপজেতে এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
নর্থ মেসিডোনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে চায় দেশটি। এর অংশ হিসেবেই নয়াদিল্লিতে অবস্থানরত বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেসিডোনিয়ার রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির নতুন অনারারি কনসাল জেনারেলকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এই বৈঠকে গার্মেন্টস, কনস্ট্রাকশন ও ফ্যাক্টরি খাতে কর্মী নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার কর্মীর জন্য কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই সীমিত পরিসরে ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসা প্রদান শুরু হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, নর্থ মেসিডোনিয়া শুধু শ্রম নয়, উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। আলোচনায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শতাধিক এইআই (AI) ভিত্তিক স্কলারশিপ চালুর বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, পূর্ব ইউরোপে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে নর্থ মেসিডোনিয়ার সঙ্গে কয়েক বছর আগে থেকেই আলোচনা চলছিল। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে এই উদ্যোগটি আজ বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে।
নর্থ মেসিডোনিয়া বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আলোচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির অগ্রসর দেশগুলোর একটি। দেশটির আইটি খাতে দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে। অধিকাংশ তরুণ নিজ দেশ ছেড়ে উন্নত ইউরোপীয় দেশগুলোতে চলে যায়, ফলে স্থানীয়ভাবে কর্মীর চাহিদা বেড়েছে।
এদিকে ইউরোপিয়ান হাইওয়ে নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজেও নির্মাণ শ্রমিকের প্রয়োজন হচ্ছে। বেতন কাঠামো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর তুলনায় অনেক ভালো, এবং খাবারের জন্যও আলাদা বরাদ্দ রয়েছে। কর্মপরিবেশও অত্যন্ত অনুকূল।
তবে ইউরোপে কর্মরত কূটনীতিকরা সতর্ক করে দিয়েছেন, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশিদের ইমেজ সংকট এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকেই কর্মচুক্তির মেয়াদ পূর্ণ না করে পালিয়ে যান, যা নিয়োগকর্তার আস্থায় চিড় ধরায়।
ট্রানজিট হিসেবে এসব দেশ ব্যবহার না করে, চুক্তি মোতাবেক মেয়াদ পূরণ করে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করলে বাংলাদেশের জন্য টেকসই শ্রমবাজার তৈরি করা সহজ হবে।
এই উদ্যোগ বাংলাদেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্যও আশাব্যঞ্জক।