বিপন্নপ্রায় নয়া ভাঙনি নদী খনন: পুনরুদ্ধারের আহ্বান, দুর্ভোগ হ্রাসের সম্ভাবনা
এক সময় খরস্রোতা নয়া ভাঙনি নদী আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। মাঝখানে জেগে ওঠা চরগুলোতে চাষ হচ্ছে ইরি-বোরো ধানসহ নানা ফসল। কৃষকরা সহজেই হেঁটে পার হচ্ছেন নদী, যা এর নাব্যতা হারানোর প্রমাণ। শুকনো মৌসুমে কৃষি উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, আর বর্ষাকালে বন্যার আশঙ্কা বাড়ছে।
বরিশাল সদর থেকে শুরু হয়ে মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা ও মুলাদী উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এই নদী এক সময় বাণিজ্য ও নৌ-যোগাযোগের মূল কেন্দ্র ছিল। মুলাদী ও খাশের হাটের মতো ব্যবসাকেন্দ্রগুলো থেকে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব পেত। কিন্তু এখন ডুবোচরের কারণে ট্রলার চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।
কথিত আছে, এক সময় পালতোলা নৌকা, স্টিমার ও লঞ্চে এ অঞ্চলের নদীগুলো ছিল কর্মব্যস্ত। কিন্তু আজ সেগুলো কেবল স্মৃতি। এখানকার মানুষের জীবিকা কৃষিজাত পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। মুলাদী, খাশের হাট, শৌলা বাজারসহ এ অঞ্চলের ব্যবসা কেন্দ্রগুলো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা সস্তায় পণ্য কিনে নৌপথে বিক্রি করতেন, যা এখন প্রায় বন্ধ।
ঢাকা থেকে মুলাদী পর্যন্ত বড় লঞ্চগুলো বর্তমানে শৌলা লঞ্চঘাটে থেমে যায়। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ট্রলারে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। এ ছাড়া মুলাদী থেকে ঢাকা যেতে হলে ট্রলারে শৌলা গিয়ে লঞ্চ ধরতে হয়, যা যাত্রীদের জন্য বাড়তি ভোগান্তির কারণ।
সমস্যার সমাধানে নয়া ভাঙনি নদীর গাছুয়া ইউনিয়ন, আকন বাজার, পৈক্ষা নমরহাট, সুইজগেট ও কিলেরহাট এলাকায় ড্রেজিং প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রশাসন কার্যক্রম শুরু করেছে। বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে প্রায় দুই কিলোমিটার নদীতে সাতটি স্থানে ড্রেজিং চলবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। ড্রেজিং সম্পন্ন হলে ঢাকা-মুলাদী নৌপথ আবারও সহজ ও নিরাপদ হবে।