আজ তামাকমুক্ত বিশ্ব দিবস, বাজেটে কর না বাড়ায় স্বস্তির হাওয়া

- আপডেট সময় ০১:০১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
- / 3
আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’। দিবসটি উপলক্ষে তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন সচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তরুণ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনগুলো।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে বলেন, যুবসমাজকে তামাকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তবে দুর্বল নিয়ন্ত্রণ, আইনের সঠিক প্রয়োগের অভাব এবং সামাজিক সচেতনতা কম থাকায় দেশে তামাকপণ্যের আগ্রাসন বেড়েই চলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর অন্যতম কারণ তামাক। প্রতিদিন গড়ে ৪৪২ জন মানুষ তামাকজনিত রোগে প্রাণ হারাচ্ছেন, যার বার্ষিক সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৩০ জন। ব্ল্যাড ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সারের মতো রোগের চিকিৎসা সেবা দুর্বল হওয়ায় স্বাস্থ্য খাতে চাপ বাড়ছে।
তামাকপণ্য নিরুৎসাহ করতে প্রতিবছর কর বাড়ানো হলেও এবারের বাজেটে (২০২৫-২৬) সিগারেটের দামে কোনো বাড়তি শুল্ক না থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, জানুয়ারিতে একবার দাম বাড়ানো হওয়ায় এবার তা পুনরায় বাড়ানো হচ্ছে না।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তথ্যমতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক খাত থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা, অথচ সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় তামাকজনিত ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতসহ হিসাব করলে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় তিন গুণ।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক জানান, দেশের ৬৭ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, যার পেছনে বড় কারণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপান। কিশোর বয়সেই ধূমপানের প্রভাব পড়ছে উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের মতো রোগে। শিশুদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে অ্যাজমা, ফুসফুসের সংক্রমণ, স্ট্রোক ও হৃদরোগ।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, দেশে হৃদরোগে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে, যার বড় কারণ ধূমপান। অনেকেই ৬০ বছর হওয়ার আগেই মৃত্যুর শিকার হচ্ছেন।
প্রজ্ঞা ও আত্মা জানিয়েছে, সিগারেট কর কাঠামো সংস্কার করলে রাজস্ব বাড়বে এবং ধূমপান নিরুৎসাহিত হবে। তবে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে ধীরগতি থাকায় ২০৪০ সালের লক্ষ্য নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।