ইসলামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত
মহানবী (সাঃ)-এর বিদায় হজ:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মরণীয় ঘটনা হলো বিদায় হজ। এটি ইসলামের চূড়ান্ত পরিপূর্ণতার প্রতীক এবং মানবজাতির জন্য মহানবীর (সাঃ) অমর বার্তা। বিদায় হজ অনুষ্ঠিত হয় ১০ হিজরির জিলহজ মাসে, যখন মহানবী (সাঃ) তাঁর জীবনের শেষ হজ সম্পন্ন করেন। বিদায় হজের সময় প্রিয় নবী (সাঃ) ১ লাখ ২৪ হাজার সাহাবির সামনে একটি অসামান্য ভাষণ প্রদান করেন, যা ইসলামের সার্বজনীন নীতিমালার সারসংক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ভাষণটি আরাফাতের ময়দানে দেওয়া হয়েছিল এবং এটিই তাঁর জীবনের শেষ খুতবা। এ খুতবায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মানবাধিকার, নারী অধিকার, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, এবং ইসলামের মূলনীতি নিয়ে কথা বলেন।
মহানবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের জীবনের, সম্পদের ও সম্মানের ওপর অন্য কারো অধিকার নেই, যেমন পবিত্র এই দিন, এই মাস এবং এই স্থানের মতো পবিত্র। নারী ও পুরুষ একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল এবং কেউ কারো প্রতি অন্যায় করবে না। আল্লাহর কাছে সমগ্র মানবজাতি এক এবং কারো বংশগৌরব অন্যের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানের মানদণ্ড নয়।”
বিদায় হজের সময় মহানবী (সাঃ) কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত নাজিল করেন: “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করেছি এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করেছি।” (সুরা মায়িদা, ৫:৩)।
বিদায় হজের মাধ্যমে তিনি মানবজাতিকে এক নতুন দিশা দিয়েছেন এবং চিরতরে এ বার্তা দিয়ে গেছেন যে ইসলাম সাম্য, ন্যায়বিচার এবং কল্যাণের ধর্ম। এই স্মরণীয় ঘটনা প্রতিটি মুসলমানের জীবনে শিক্ষা এবং অনুপ্রেরণার উৎস।