উত্তরাখণ্ডে ১৭০টি মাদ্রাসা সিল, ধর্মীয় বৈষম্যের অভিযোগে কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা

- আপডেট সময় ০১:২৯:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫০৭ বার পড়া হয়েছে
ভারতের উত্তরাখণ্ডে অনিবন্ধিত মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে রাজ্য প্রশাসন সম্প্রতি ১৭০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান সিল করে দিয়েছে। সর্বশেষ রবিবার হলদওয়ানি জেলায় আরও সাতটি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক ও ধর্মীয় অস্থিরতা। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এসব মাদ্রাসা রাজ্য শিক্ষা বিভাগ কিংবা মাদ্রাসা বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল। তাই সেগুলো বন্ধ করা হয়েছে আইনানুগ প্রক্রিয়াতেই। তবে আলেম সমাজ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস এই সিদ্ধান্তকে দেখছেন ভিন্ন চোখে। তাদের মতে, এটি একটি সুপরিকল্পিত ধর্মীয় বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ এবং একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে টার্গেট করার অপচেষ্টা।
কংগ্রেস নেতা যশপাল আর্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি শুধুমাত্র মাদ্রাসার কথাই কেন বারবার বলছেন? অন্য অনিবন্ধিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে তো কিছু বলা হচ্ছে না।” তিনি অভিযোগ করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে কোনো নজর দেওয়া হচ্ছে না।
অন্যদিকে বিজেপি এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেসকে ভোট ব্যাংকের রাজনীতির দায়ে অভিযুক্ত করেছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি মহেন্দ্র ভাট বলেন, “অবৈধ মাদ্রাসা সিল করা হয়েছে, এতে ধর্মীয় কোনো বৈষম্য নেই। বরং কংগ্রেসই সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করছে।”
জমিয়তে উলেমা-ই-হিন্দের নেতারা দাবি করছেন, অনেক মক্তবকে মাদ্রাসার সঙ্গে গুলিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। নৈনিতালের সংগঠনের সভাপতি মাওলানা মুকিম কাসমি বলেন, “সিল করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অনেকগুলো ছিল শুধুমাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার ছোটখাটো কেন্দ্র, যেগুলো পূর্ণাঙ্গ মাদ্রাসা নয়।”
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০টি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে ৪১৫টি উত্তরাখণ্ড মাদ্রাসা বোর্ড এবং ১১৭টি ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে পরিচালিত। বাকিগুলো অনিবন্ধিত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১৪ শতাংশ, যার অধিকাংশ বসবাস করেন হরিদ্বার, ইউএস নগর ও তরাই অঞ্চলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অভিযান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং ধর্মীয় সহাবস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।