নির্বাচন সংস্কারে সুপারিশঃ আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ হারাচ্ছেন যারা
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। পাশাপাশি, জামায়াতে ইসলামী দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার করে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তবে আলোচনায় আছে, আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না। রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত আরও একটি ইস্যু হলো, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার আসামি বা সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন কি না।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার এ বিষয়ে বলেন, “গুম, খুন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতরা কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না। এটি সব দলের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য।” তিনি জানান, সৎ উদ্দেশ্যে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করাই এর মূল লক্ষ্য।
বদিউল আলম আরও বলেন, “আমরা কোনো দলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার পক্ষে নই। তবে যারা গুরুতর অপরাধে জড়িত, তাদের জনগণ ক্ষমতায় দেখতে চায় না।” তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বা বিচারিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের প্রার্থিতা নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন ভবনে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চার মাসের মধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচনে পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন।
এবারের সুপারিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে সেই আসনে পুনর্নির্বাচন হবে। এছাড়া, ‘না’ ভোটের বিধান পুনরায় চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। যদি ‘না’ ভোট বেশি হয়, তবে পরাজিত প্রার্থীরা পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনটি মোট ১৮টি বিষয় নিয়ে ১৫০টির মতো সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে ‘দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও)’ সংশোধনের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।