পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের উত্তেজনা তুঙ্গে, নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ট্রাম্প
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে পানামা খালের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সেখানে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে, যা নিয়ে বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।
পানামা খাল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল। দেশটির সংবিধানে খালের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা হলেও মার্কিন সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পানামা সরকার। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সার্বভৌমত্বের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।
মার্কিন উদ্যোগের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। বেইজিংয়ের অভিযোগ, পানামায় মার্কিন হস্তক্ষেপ চীনা বিনিয়োগ ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ব্যাহত করার উদ্দেশ্যেই নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, পানামা খালের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছে মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক, যারা ২২.৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। চীন এই পদক্ষেপকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে অভিহিত করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের সামরিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে পানামা ও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের সংযোগকারী পানামা খাল বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে এটি যুক্তরাষ্ট্র ও পানামার যৌথ প্রশাসনে পরিচালিত হলেও, ১৯৯৯ সালে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পান পানামা। তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য, “পানামা খাল এখন চীনের নিয়ন্ত্রণে,” নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই পানামা খালের ওপর সামরিক আধিপত্য বিস্তারের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, নাকি এটি শুধুই রাজনৈতিক চাপে রাখা একটি কৌশল? সময়ই বলে দেবে, এই ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কোন দিকে মোড় নেয়।