ঢাকা ০২:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ইউনূস-তারেক বৈঠকে আশার আলো দেখছে খেলাফত মজলিস ওয়ানডেতে নেতৃত্বে নতুন অধ্যায়, অধিনায়ক হলেন মেহেদী হাসান মিরাজ লন্ডনে তারেক রহমান-ড. ইউনূস বৈঠকে নির্দিষ্ট এজেন্ডা নেই: প্রেস সচিব কামিন্সের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত দ.আফ্রিকা, অল্প রানেও লিড অজিদের এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট বিধ্বস্তে ৫ মেডিকেল চিকিৎসা শিক্ষার্থী নিহত জনসমর্থন থাকলে কেউ পালায় না: এটিএম আজাহারুল ইসলাম এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা: ২৪২ জন আরোহীর কেউ বেঁচে নেই বলে আশঙ্কা আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে: প্রেস সচিব শফিকুল আলম ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাবনা সাতক্ষীরায় জুয়ার আসরে পুলিশের হানা, গ্রেপ্তার ৯

আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • / 10

ছবি সংগৃহীত

 

আজ ১২ জুন, বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশুশ্রমের শৃঙ্খল ছিঁড়ি’। দিবসটি ঘিরে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউনিসেফ এবং দেশীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলো বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

শিশুশ্রম নিরসনে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে শিশুশ্রমমুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার ‘জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২৫’ বাস্তবায়ন করছে। এ লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ’। পাশাপাশি পথশিশু পুনর্বাসন ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচিও চালু আছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমবিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুমোদন করেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০০৩ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশু ছিল প্রায় ৩২ লাখ। সময়ের সঙ্গে নানা পদক্ষেপে তা কমে আসে ১৭ লাখে। কিন্তু ২০২২ সালের সর্বশেষ জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ অনুযায়ী, শ্রমে নিয়োজিত শিশু এখন ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭ ২০১৩ সালের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি।

শিশুশ্রম নিরসনে গত এক যুগে প্রায় ৩৫২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বাস্তব অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহৃত না হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এডুকো বাংলাদেশের শিশুশ্রম নিরসন ব্যবস্থাপক আফজাল কবির খান জানান, প্রকল্পে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকে না, আবার যা থাকে, সেটাও সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় না।

বিবিএসের এক জরিপ বলছে, শ্রমে নিয়োজিত ২০ লাখ ১০ হাজার শিশু কোনো পারিশ্রমিকই পায় না। যারা পায়, তাদের মাসিক গড় আয় মাত্র ৬ হাজার ৬৭৫ টাকা। গৃহকর্ম বা ক্ষুদ্র কারখানার মতো অনানুষ্ঠানিক খাতে অধিকাংশ শিশুই বেতনবিহীনভাবে কাজ করছে।

জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০ অনুযায়ী, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের শ্রমকে শিশুশ্রম হিসেবে ধরা হয়। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা হালকা ও ঝুঁকিহীন কাজ করলে তা অনুমোদনযোগ্য, তবে সপ্তাহে ৪২ ঘণ্টার বেশি কাজ হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারগুলোকে সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে। একই সঙ্গে সচেতনতা বাড়ানো এবং শিক্ষাব্যবস্থা সহজলভ্য করাও জরুরি। শুধু পরিকল্পনা নয়, দরকার কঠোর বাস্তবায়ন ও জবাবদিহিতা তবেই শিশুশ্রমমুক্ত ভবিষ্যৎ সম্ভব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস

আপডেট সময় ০২:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

 

আজ ১২ জুন, বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশুশ্রমের শৃঙ্খল ছিঁড়ি’। দিবসটি ঘিরে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউনিসেফ এবং দেশীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলো বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

শিশুশ্রম নিরসনে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে শিশুশ্রমমুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার ‘জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২৫’ বাস্তবায়ন করছে। এ লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ’। পাশাপাশি পথশিশু পুনর্বাসন ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচিও চালু আছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমবিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুমোদন করেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০০৩ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশু ছিল প্রায় ৩২ লাখ। সময়ের সঙ্গে নানা পদক্ষেপে তা কমে আসে ১৭ লাখে। কিন্তু ২০২২ সালের সর্বশেষ জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ অনুযায়ী, শ্রমে নিয়োজিত শিশু এখন ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭ ২০১৩ সালের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি।

শিশুশ্রম নিরসনে গত এক যুগে প্রায় ৩৫২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বাস্তব অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহৃত না হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এডুকো বাংলাদেশের শিশুশ্রম নিরসন ব্যবস্থাপক আফজাল কবির খান জানান, প্রকল্পে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকে না, আবার যা থাকে, সেটাও সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় না।

বিবিএসের এক জরিপ বলছে, শ্রমে নিয়োজিত ২০ লাখ ১০ হাজার শিশু কোনো পারিশ্রমিকই পায় না। যারা পায়, তাদের মাসিক গড় আয় মাত্র ৬ হাজার ৬৭৫ টাকা। গৃহকর্ম বা ক্ষুদ্র কারখানার মতো অনানুষ্ঠানিক খাতে অধিকাংশ শিশুই বেতনবিহীনভাবে কাজ করছে।

জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০ অনুযায়ী, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের শ্রমকে শিশুশ্রম হিসেবে ধরা হয়। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা হালকা ও ঝুঁকিহীন কাজ করলে তা অনুমোদনযোগ্য, তবে সপ্তাহে ৪২ ঘণ্টার বেশি কাজ হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারগুলোকে সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে। একই সঙ্গে সচেতনতা বাড়ানো এবং শিক্ষাব্যবস্থা সহজলভ্য করাও জরুরি। শুধু পরিকল্পনা নয়, দরকার কঠোর বাস্তবায়ন ও জবাবদিহিতা তবেই শিশুশ্রমমুক্ত ভবিষ্যৎ সম্ভব।