উপকূলের টাইগার চিংড়ি পাড়ি জমাচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকায়, দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা

- আপডেট সময় ১০:৩৬:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
- / 22
বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমুদ্রতীরে চলছে টাইগার চিংড়ি আহরণের ব্যস্ততা। নভেম্বর থেকে মার্চ এই মৌসুমে পটুয়াখালী, ভোলা ও বরগুনার উপকূলীয় অঞ্চলে যেন উৎসবের আমেজ। টাইগার চিংড়ি আহরণ, বাছাই ও প্রক্রিয়াজাতকরণে কর্মচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে ওঠে দ্বীপ ও উপকূলীয় এলাকা।
পটুয়াখালীর চরমোন্তাজ দ্বীপে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা গভীর সমুদ্র থেকে ফিরছেন ফিশিং বোটে করে। ঘাটে নামানো হচ্ছে মাছ। এরপর শুরু হয় ব্যস্ততম কাজ চিংড়ি বাছাই, মাথা কাটা, এবং রফতানির উপযোগী করে প্রক্রিয়াজাত করা। এ সব কাজে নিয়োজিত রয়েছে হাজার হাজার নারী-পুরুষ।
স্থানীয়রা জানান, টাইগার চিংড়ির সুবাদে জীবিকা পেয়েছেন বহু পরিবার। প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৪০০ টাকা আয় করছেন অনেকে, যা তাদের সংসারের খরচ চালাতে সহায়ক। বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণ উপকূলীয় অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশে টাইগার চিংড়ির চাহিদা সীমিত হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে, বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকায়, রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার টাইগার চিংড়ি রফতানি হচ্ছে বিদেশে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, রফতানিযোগ্য চিংড়ি সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতে জেলেদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চিংড়ির অপচনশীল অংশ থেকেও তৈরি হচ্ছে মাছ ও পশুর খাদ্য যা খুলে দিয়েছে বাড়তি আয়ের আরেকটি পথ।
সমুদ্রঘেঁষা অঞ্চল থেকে সংগৃহীত টাইগার চিংড়ি খুলনায় পাঠানো হয়, সেখান থেকে বিভিন্ন রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পৌঁছে যায় বিদেশের বাজারে।
টাইগার চিংড়ি শুধু দেশের রফতানি খাতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়নি, বরং উপকূলীয় মানুষদের জীবনে এনেছে স্থিতি, দিয়েছে আত্মনির্ভরতার ভরসা। বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে তাই আজ ভেসে আসে হাজারো স্বপ্ন।