ঢাকা ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পাকিস্তানে সাংবাদিক গ্রেপ্তার, উদ্বিগ্ন মানবাধিকার মহল

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:০৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
  • / 23

ছবি সংগৃহীত

 

পাকিস্তানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন দিন দিন সংকুচিত হয়ে পড়ছে। অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘রাফতার’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক ফারহান মল্লিককে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক পোস্ট এবং ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফআইএ। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) তাকে আটক করার পর শুক্রবার (২১ মার্চ) আদালতে হাজির করলে তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।

এই গ্রেপ্তার দেশটির সদ্য সংশোধিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় হয়েছে, যেখানে ‘ভীতিকর বা মিথ্যা’ তথ্য ছড়ানোর অপরাধে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে ‘রাফতার’ চ্যানেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রামাণ্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি, বরং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি দমনমূলক পদক্ষেপ।

ফারহানের গ্রেপ্তার ঘিরে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। পাকিস্তানের হিউম্যান রাইটস কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই পদক্ষেপ মতপ্রকাশের অধিকার হরণ এবং সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর একটি কৌশল।”

গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫২তম যা স্পষ্টতই সরকারের কণ্ঠরোধ নীতির ইঙ্গিত দেয়। বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী ইমান মাজারি বলেন, “নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।”

দেশটিতে আগে থেকেই অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর রয়েছে কঠোর নজরদারি। ইউটিউব ও টিকটক একাধিকবার বন্ধ থাকলেও বর্তমানে পুরোপুরি নিষিদ্ধ রয়েছে ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার)।

ফারহান মল্লিকের গ্রেপ্তারের পর দেশ-বিদেশের সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেন, স্বাধীন মতপ্রকাশ কোনো অপরাধ নয় বরং গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি। অবিলম্বে তার মুক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।

পাকিস্তানে মতপ্রকাশের ওপর যে অদৃশ্য শৃঙ্খল ক্রমেই শক্ত হচ্ছে, ফারহানের ঘটনা যেন তারই প্রতিচ্ছবি।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পাকিস্তানে সাংবাদিক গ্রেপ্তার, উদ্বিগ্ন মানবাধিকার মহল

আপডেট সময় ০৪:০৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

 

পাকিস্তানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন দিন দিন সংকুচিত হয়ে পড়ছে। অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘রাফতার’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক ফারহান মল্লিককে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক পোস্ট এবং ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফআইএ। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) তাকে আটক করার পর শুক্রবার (২১ মার্চ) আদালতে হাজির করলে তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।

এই গ্রেপ্তার দেশটির সদ্য সংশোধিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় হয়েছে, যেখানে ‘ভীতিকর বা মিথ্যা’ তথ্য ছড়ানোর অপরাধে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে ‘রাফতার’ চ্যানেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রামাণ্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি, বরং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি দমনমূলক পদক্ষেপ।

ফারহানের গ্রেপ্তার ঘিরে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। পাকিস্তানের হিউম্যান রাইটস কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই পদক্ষেপ মতপ্রকাশের অধিকার হরণ এবং সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর একটি কৌশল।”

গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫২তম যা স্পষ্টতই সরকারের কণ্ঠরোধ নীতির ইঙ্গিত দেয়। বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী ইমান মাজারি বলেন, “নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।”

দেশটিতে আগে থেকেই অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর রয়েছে কঠোর নজরদারি। ইউটিউব ও টিকটক একাধিকবার বন্ধ থাকলেও বর্তমানে পুরোপুরি নিষিদ্ধ রয়েছে ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার)।

ফারহান মল্লিকের গ্রেপ্তারের পর দেশ-বিদেশের সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেন, স্বাধীন মতপ্রকাশ কোনো অপরাধ নয় বরং গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি। অবিলম্বে তার মুক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।

পাকিস্তানে মতপ্রকাশের ওপর যে অদৃশ্য শৃঙ্খল ক্রমেই শক্ত হচ্ছে, ফারহানের ঘটনা যেন তারই প্রতিচ্ছবি।