ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলুর গ্রেপ্তার ঘিরে উত্তাল তুরস্ক, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ৩২ প্রদেশে

- আপডেট সময় ০৩:৪৮:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
- / 29
ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তার ঘিরে টানা তৃতীয় দিনের মতো উত্তাল তুরস্কের রাজপথ। সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে পুলিশ ব্যাপক টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে।
এর আগে সরকার চার দিনের জন্য সব ধরনের সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ইমামোগলুর গ্রেপ্তার ও তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা বাতিলের সিদ্ধান্ত জনগণের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বিরোধীরা বলছে, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তাকে প্রতিযোগিতা থেকে সরাতে এ পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তার অভিযোগে ইমামোগলুসহ আরও ১০৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে আরও বহু মানুষকে আটক করা হয়।
বিরোধীদল সিএইচপি দাবি করেছে, শুধু ইস্তাম্বুলেই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে তিন লাখের বেশি মানুষ। সিটি হলের সামনে জনসমুদ্র গড়ে ওঠে। সেতু ও রাস্তাগুলোতে প্রতিবন্ধকতার কারণে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানায়।
গ্রেপ্তারের আগের দিন ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় তার ডিপ্লোমা বাতিল করে, যাতে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার যোগ্যতা হারান তিনি। ইমামোগলু ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করবেন।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, “দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে অশান্তি ছড়ানোর হাতিয়ার বানানো হচ্ছে। সরকার এই চক্রান্ত সহ্য করবে না।” একইসঙ্গে তিনি সিএইচপিকে ‘সন্ত্রাসের অংশীদার’ বলেও আখ্যা দেন।
তবে সমালোচকদের দাবি, এটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে সরকার এমন দাবি করলেও বিরোধীরা একে ‘গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান’ বলেই দেখছেন।
এএফপির তথ্যমতে, বিক্ষোভ ইতিমধ্যে দেশটির ৩২টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অন্তত ৮৮ জন বিক্ষোভকারী এবং ১৬ পুলিশ আহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হয়ে ২৫ বছরের একে পার্টির আধিপত্য ভেঙে দেন ইমামোগলু। এবারও তাকেই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগেই তাকে কারাগারে পাঠানোর পদক্ষেপে তুরস্কে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।