কানাডা ও ইইউর পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তাপ আরও বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন। প্রধান দুই বাণিজ্য অংশীদারের শুল্কের পাল্টা জবাবের ঘোষণার পর, বুধবার (১২ মার্চ) ট্রাম্প আবারও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত সব ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন ট্রাম্প, যা বুধবার থেকে পুরো বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য। এরপর ট্রাম্প হুমকি দেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি আগামী মাসে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের উদ্যোগ নেয়, তবে তিনি তাদের পণ্যে আরও শুল্ক আরোপ করবেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, “যতটা তারা আমাদের কাছ থেকে নেবে, আমরাও ততটা নেব।”
বিশ্বব্যাপী শুল্ক নীতি নিয়ে ট্রাম্পের মনোযোগ বিনিয়োগকারী, ভোক্তা এবং ব্যবসায়ী মহলে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি, মন্দার আশঙ্কাও বাড়িয়েছে। শুল্ক নিয়ে বিতর্কের কারণে ট্রাম্প বারবার প্রতিবেশী দেশ কানাডাকে শুল্কের মাধ্যমে চাপ দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক এখন তলানিতে পৌঁছেছে।
এদিকে, কানাডা ট্রাম্পের শুল্ক নীতির পাল্টা জবাব দেয়ার হুমকি দিয়েছে। শুধু হুমকি নয়, বুধবার ট্রাম্পের শুল্ক কার্যকর হওয়ার পরপরই কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ২৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। কানাডার অর্থমন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক বলেন, “আমাদের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম শিল্পকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হলে, আমরা চুপ করে বসে থাকব না।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নও পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ‘অযৌক্তিক’ শুল্কের বিরুদ্ধে, ইইউ ২৬ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, “ভূরাজনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার এই সময়ে আমাদের অর্থনীতিতে এমন শুল্ক চাপানো সাধারণ স্বার্থে নয়।”
বিশ্বের দুই প্রধান অর্থনৈতিক শক্তির এই শুল্ক বিরোধ কেবল বাণিজ্যিক সম্পর্ককেই নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিকেও বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলেছে।