বাংলাদেশে প্রতিশোধমূলক সহিংসতা তদন্তে জাতিসংঘের প্রতিবেদন কীভাবে সহায়ক হবে? বললেন ফলকার টুর্ক
বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণ-অভ্যুত্থানকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদন দেশটিতে সত্য উন্মোচন, জবাবদিহিতা, ক্ষতিপূরণ এবং সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক।
সোমবার (৩ মার্চ) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৮তম অধিবেশনে বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ফৌজদারি মামলা ও সংখ্যালঘুদের ওপর প্রতিশোধমূলক সহিংসতার তদন্তে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে এই প্রতিবেদন অত্যন্ত সহায়ক হবে।”
ফলকার টুর্ক অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া এক আন্দোলন তৎকালীন সরকার ‘নির্মমভাবে দমন’ করে, যা ব্যাপক সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্ম দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ, নির্বিচার গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি নতুন ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরির পথে রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দল যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ রাখবে।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) গত ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের জেনেভা অফিস থেকে “বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের আন্দোলন সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন” শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা দিক তুলে ধরা হয়।
এই প্রতিবেদনের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, কূটনৈতিক মহল এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করবে এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে নতুন সংস্কারের পথে এগিয়ে যেতে বাধ্য করবে।