ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: ইউরোপীয় নেতাদের কঠোর সতর্কবার্তা

- আপডেট সময় ০৭:৫২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
- / 2
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই বৈঠকটি ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে। তবে ইউরোপের ছয়টি দেশের নেতা এবং ইউরোপীয় কমিশন স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ইউক্রেনের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো শান্তি চুক্তি গ্রহণ করা হবে না। তারা রাশিয়ার ওপর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার রাতে ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় কমিশনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় আমরা অটল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যুদ্ধের সমাপ্তি অবশ্যই ন্যায্য হতে হবে, যাতে ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধের মাঝপথে ভূমি সমর্পণ রুশ আগ্রাসনকে আরও উস্কে দিতে পারে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি “২৪ ঘণ্টার মধ্যে” যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন এবং পুতিনের সঙ্গে একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছেন। তবে সেই চুক্তিতে “অঞ্চল বিনিময়” বিষয়টি উদ্বেগজনক।
শনিবার যুক্তরাজ্যের চেভেনিং হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ও ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের প্রধান সহকারী আন্দ্রে ইয়ারমাক জানান, যুদ্ধবিরতি জরুরি হলেও কিয়েভ কোনো ধরনের আঞ্চলিক ছাড় দেবে না।
বৈঠকে ইউরোপীয় পক্ষ থেকে পাল্টা প্রস্তাবও দেওয়া হয়, যেখানে প্রথমে যুদ্ধবিরতি এবং পরবর্তীতে আলোচনার কথা বলা হয়েছে। যে কোনো আঞ্চলিক বিনিময় অবশ্যই সমমাপের ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার সঙ্গে হতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও জানান, “ইউক্রেন ছাড়া শান্তি আলোচনা সম্ভব নয়।” মাখোঁ বলেন, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু ইউক্রেনের জনগণের।
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ার অনুরোধে আপাতত দ্বিপাক্ষীয় বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে, তবে ট্রাম্প ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলনে রাজি আছেন। আলাস্কা বৈঠকটি হবে ২০২১ সালের জেনেভা সম্মেলনের পর প্রথমবার কোনো বর্তমান মার্কিন ও রুশ প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি বৈঠক। আগের বৈঠকের ৯ মাস পর রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু করে।
বর্তমানে রাশিয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া, খেরসনসহ ২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়াও দাবি করছে, যদিও ওই চারটি অঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ এখনও রুশ বাহিনীর হাতে নেই। পূর্ব ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে রুশ বাহিনী।