সিরিয়ায় ইসরাইলের তাণ্ডব, তিন দিনে ১৬০ বার বিমান হামলা

- আপডেট সময় ১১:০৬:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / 7
সিরিয়া, ফিলিস্তিন ও লেবাননে একযোগে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। সর্বশেষ, গত সোমবার (১৪ জুলাই) থেকে বুধবার (১৬ জুলাই) পর্যন্ত সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সোয়েইদা ও আশপাশের এলাকায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে লক্ষ্য করে অন্তত ১৬০ বার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। খবর জেরুজালেম পোস্টের।
জানা গেছে, এসব হামলায় সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ কাসর আল-শাবা এবং জেনারেল স্টাফ কমপ্লেক্সসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার দামেস্কে ইসরাইলি হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছে।
আইডিএফ হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হামলাকে ‘সতর্কতামূলক’ বলে উল্লেখ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দামেস্কে বিস্ফোরণ ও ধোঁয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। এছাড়া, দারা ও কাতানা শহরেও বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
আইডিএফ দাবি করেছে, তারা সিরিয়ার সোয়েইদা অঞ্চলে সেনা সরিয়ে সেখানে দ্রুজ সম্প্রদায়ের জন্য স্বায়ত্তশাসনের পথ পরিষ্কার করতে প্রস্তুত। এই ঘোষণার পরই ইসরাইলি বাহিনী সিরিয়ার সাজোঁয়া যান ও ট্যাঙ্ক লক্ষ্য করে একাধিক আক্রমণ চালায়। তবে কতটি ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে বা সেনা হতাহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো হয়নি।
সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে গত ১৩ জুলাই। সুন্নি বেদুঈন গোষ্ঠীর সদস্যরা এক দ্রুজ তরকারি বিক্রেতাকে অপহরণ করলে পাল্টা অপহরণ শুরু হয়। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সোয়েইদা অঞ্চলে।
ব্রিটেনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২৪৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৯২ জন সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের সদস্য, যাদের ২১ জন সিরীয় সেনার হাতে নিহত হন। এছাড়া ১৩৮ জন নিরাপত্তাকর্মী ও ১৮ জন বেদুঈন যোদ্ধাও নিহত হয়েছেন।
সংঘাত নিয়ন্ত্রণে সিরিয়ার সরকার সেনা মোতায়েন ও নিরাপদ করিডর স্থাপনের মতো পদক্ষেপ নিলেও ইসরাইলি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। ইসরাইল স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা দ্রুজদের সুরক্ষায় যেকোনো পর্যায়ে সামরিক অভিযান চালাতে প্রস্তুত।
লেবানন, জর্ডান ও ইসরাইলেও বসবাসরত এই শিয়া মতাদর্শভিত্তিক সম্প্রদায়কে ঘিরে অঞ্চলজুড়ে উদ্বেগ বেড়েছে। এরই মধ্যে আরব দেশগুলো ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।